বনমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় দফার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই উত্তরবঙ্গে হাতি সাফারি বাড়ানোর কথা বলেছিলেন বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। সেই মতো ওই পরিকল্পনার ব্যাপারে জোর দেওয়ার কথা জানালো বন দফতর।
পর্যটকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাইছে বন দফতর। দ্রুত বৈঠক করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। তারপরেই দফতরের পোষা হাতির মধ্যে কিছু সংখ্যককে সাফারির জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করা হবে। বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “প্রশিক্ষিত হাতির সংখ্যা বাড়িয়ে সাফারির সুযোগ বাড়ানোর জন্যই এই উদ্যোগ। নিচ্ছি। শীঘ্রই দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হবে।”
ডুয়ার্সের জলদাপাড়া, বড়ডাবরিতে সাধারণ পর্যটকেরা হাতি সাফারির সুযোগ পান। গরুমারায় হাতি সাফারির সুযোগ থাকলেও সাধারণ পর্যটকেরা তা করতে পারেন না। শুধুমাত্র কালীপুর, ধূপঝোড়া বা রামসাই বনবাংলোয় রাত্রিবাস করছেন এমন পর্যটকেরা সেখানে সাফারি করতে পারেন। দুর্গাপুজোর মত মরসুমের ছুটিতে চাহিদার ব্যাপক বৃদ্ধিতে সমস্যাও অনেকটা বেড়ে যায়। পরিস্থিতির জেরে গতবছর পুজোর সময় সাফারির সুযোগ অস্থায়ীভাবে বাড়ানোর চেষ্টা হয়। এবার দ্বিতীয় দফায় বনমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে ওই ব্যাপারে পাকাপাকিভাবে সুযোগ বাড়াতে জোর দেন বিনয়বাবু। দফতরের কয়েকজন আধিকারিক জানিয়েছেন, সাফারির পাশাপাশি কুঞ্জনগর, রসিকবিল, খোল্টা, খয়েরবাড়ির মত কিছু এলাকায় হাতির ‘জয় রাইড’ চালু করা যায় কিনা সে ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম সময়ে অনেক বেশি পর্যটককে হাতির পিঠে চেপে ভ্রমণের আনন্দ দেওয়া যাবে। এই বিষয়টি নিয়েও রূপরেখা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বনপাল (বন্যপ্রাণ) সুমিতা ঘটক বলেন, “ প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে পর্যটনের সুযোগ বাড়ানো যেতেই পারে।” উত্তরবঙ্গে বন দফতরের পোষা হাতির সংখ্যা ৭৫টি। তার মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি হাতির সাফারির কাজের পাশাপাশি মাহুতের নির্দেশ মেনে লোকালয়ে ঢুকে পড়া বুনো হাতি ধরার কাজে বিশেষ প্রশিক্ষণ রয়েছে। সেই হাতিগুলি জঙ্গল পাহারার কাজের রুটিন দায়িত্বও সামলায়। বন দফতরের কর্তাদের একাংশ বলছেন, ‘‘কম বয়েসি পোষা হাতিকে সাফারির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। তাতে রুটিন জঙ্গল পাহারাও ব্যাহত হবে না।’’ উত্তরের এক বনকর্তা জানিয়েছেন, ৮ বছরের কম অন্তত ১৫টি পোষা হাতি রয়েছে। সাফারির প্রশিক্ষণের জন্য তাদের মধ্যে কয়েকটিকে বাছাই করার চিন্তাভাবনা এগিয়েছে। তিনি জানান, অন্তত ১০ বছর বয়স না হলে হাতিকে দিয়ে সাফারি করানো সম্ভব নয়। তাতেও অবশ্য একজনের বেশি চাপতে পারেননা। একমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক হাতির ক্ষেত্রে সাফারির সময় একসঙ্গে চারজন পর্যটক একসঙ্গে ভ্রমণের সুযোগ পান। ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট স্যানাল বলেন, “প্রশংসনীয় উদ্যোগ। পাশাপাশি গরুমারা ও বক্সায় সর্বস্তরের পর্যটকদের জন্য সাফারি চালু নিয়ে ভাবনা দরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy