উত্তরবঙ্গের সাহিত্য পাঠকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। অথচ সেই তুলনায় গ্রন্থাগারগুলির অবস্থা যথেষ্ট শোচনীয়। সমগ্র উত্তরবঙ্গ জুড়েই যে গ্রন্থাগারগুলি পাঠকের মনে দীর্ঘ দিন ধরে অক্সিজেন জুগিয়ে এসেছে, তাদের অনেকের অবস্থা এখন ভুতুড়ে বাড়ির মতো। যাঁরা এখনও কষ্ট করে গ্রন্থাগারে যান, তাঁরা জানেন গ্রন্থাগার থেকে পছন্দমতো বইয়ের সাথে তাঁরা একটি মূল্যবান বস্তু বাড়ি নিয়ে ফিরবেন এবং সেটি হল ধুলো। গ্রন্থাগারের সিঁড়ি থেকে সুরু করে বইয়ের তাক, সর্বত্রই ধুলোর পুরু আস্তরণ দেখা যায়। ফলে অনেক পাঠকই বাধ্য হয়ে মুখ ফেরাচ্ছেন গ্রন্থাগারগুলি থেকে। এই অব্যবস্থা কেন, এর কোনও সদুত্তর নেই। অনেক গ্রন্থাগারগুলিতেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। সন্ধ্যেবেলার দিকে গেলে দেখা যাবে, আলো জ্বলবে টিমটিম করে। বছর বছর যে নতুন বইগুলি গ্রন্থাগারের জন্য কেনা হয়, অনেক সময়ই তা দীর্ঘ দিন প্যাকেট করা অবস্থায় পড়ে থাকে গ্রন্থাগারের এক কোণে। কবে সেই প্যাকেট খোলা হবে, কবেই বা নতুন বই ঘরে আনতে পারবেন পাঠক, অধিকাংশ সময়েই এর উত্তর পাওয়া যায় না। গ্রন্থাগারের প্রতি প্রশাসনের উদাসীনতা যেন এক্ষেত্রে গ্রন্থাগারের কর্মীদের মধ্যেও সঞ্চারিত হচ্ছে। অনেক গ্রন্থাগারের অবস্থা যথেষ্ট জরাজীর্ণ। দেওয়ালের জায়গায় জায়গায় ফাটল, মাথার ওপরের ছাদের অংশ যে কোনও সময় মাথায় ভেঙে পড়বে না এমন গ্যারান্টি নেই। তবু এত অসুবিধের মধ্যেও পাঠকদের আপনি দেখতে পাবেন গ্রন্থাগারগুলিতে। কারণ তাঁরা বই পড়তে ভালোবাসেন আর তারই টানে আজও ছুটে চলে যান সেই জরাজীর্ণ ভুতুড়ে বাড়িতে যাকে আমরা গ্রন্থাগার বলে চিনি। সেই সব পাঠকদের আমার অন্তরের শ্রদ্ধা জানাই। আর প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, এবার দয়া করে গ্রন্থাগারগুলির দিকে তাকান। দেখুন, ভাবুন এবং যত দ্রুত সম্ভব গ্রন্থাগারগুলির উন্নতির জন্য কিছু করুন। —অরিন্দম ঘোষ, কদমতলা, দার্জিলিং
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy