ঝুঁকি: এ ভাবেই উঠতে হয় ট্রেনে। ছবি: অমিত মোহান্ত
এসি টু-টিয়ারের টিকিট কেটে কয়েকদিন আগে বালুরঘাট থেকে গৌড়লিঙ্ক এক্সপ্রেসে কলকাতা যাচ্ছিলেন রাধা মোহান্ত। সারারাত বাঙ্কের নিচে খুটখাট আওয়াজে ঘুম ছুটেছে বারেবারেই। পরদিন সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে নেমে বাড়ি ফিরে দেখেন প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা মিস্টির প্যাকেট কাটা। রক্ষা পায়নি আমের ব্যাগও। মিষ্টি এবং পাকা আমের দফারফা করে দিয়েছে ইঁদুরের দল।
তৎকাল টিকিটে প্রায় ১৫০০ টাকা ভাড়া গুনে শহরের খাদিমপুর এলাকার রাধাদেবীর মতো একই অভিজ্ঞতা আনন্দবাগান এলাকার উজ্জল সরকারের। অভিযোগ, এই ট্রেনে কলকাতা পর্যন্ত এসি কামরায় নিশ্চিন্ত যাত্রায় ইদানিং জল ঢালছে ইঁদুরের আতঙ্ক। মালদহ স্টেশনে গৌড় এক্সপ্রেসে বালুরঘাটের জন্য লিঙ্ক কামরাগুলি যুক্ত করে পাঠানো হয়। যাত্রীদের অভিযোগ স্টেশন মাস্টারকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।
রেল পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে গোটা জেলার বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, বালুরঘাট-চিৎপুর তেভাগা এক্সপ্রেসে বাতানুকূল একটি চেয়ারকার দিয়েও মাত্র দু’মাসের মধ্যে তা তুলে নিয়েছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ। জেলার বাণিজ্য শহর গঙ্গারামপুরের বেহাল স্টেশনে টিকিট কাউন্টার আছে। কর্মী নেই। তাই যাত্রীরা টিকিট কাটতে গিয়েও পান না। এ ছাড়াও রেললাইন থেকে প্রায় ৪ ফুট নীচে প্ল্যাটফর্ম। বয়স্কদের ট্রেনে তুলতে নাজেহাল অবস্থা হয় সহযাত্রীদের। এ বারের রেলবাজেটে গঙ্গারামপুরের বেহাল রেলস্টেশনের হাল ফেরাতে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রেল। কাজ শুরুর কোনও উদ্যোগ নেই।
দুর্ভোগ ক্রমশ বাড়তে থাকায় আগামীকাল শুক্রবার বালুরঘাটে রেল অবরোধ এবং ১৬ জুলাই গঙ্গারামপুরে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে রেল উন্নয়ন কমিটি। কমিটির সম্পাদক পীযূষকান্তি দেব অভিযোগ করেন, সম্প্রতি ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্ত উন্নতির আশ্বাস দিলেও তাঁদের বিমাতৃসুলভ মনোভাব স্পষ্ট। গঙ্গারামপুর রেল উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক অজয় দাসের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে সমস্যা মেটানোর আর্জি জানিয়েও কাজ হচ্ছে না। তাই আন্দোলন শুরু হচ্ছে। এ দিন বিকেলেও বালুরঘাটের মারফি মোড়ে পথসভা করে রেল উন্নয়ন কমিটির নেতৃবৃন্দ তুমুল বিক্ষোভ দেখান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy