Advertisement
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিজেপি নেতা ধৃত, প্রকাশ্যে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব

তৃণমূল-বিজেপি দুই দলের নেতা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু বিজেপি নেতাকে পুলিশ ধরলেও, তৃণমূল নেতা অধরাই থেকে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের সমর্থক আইনজীবীদেরই একাংশ।

ধৃত প্রকাশ রায়। —নিজস্ব চিত্র।

ধৃত প্রকাশ রায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৪৬
Share: Save:

তৃণমূল-বিজেপি দুই দলের নেতা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু বিজেপি নেতাকে পুলিশ ধরলেও, তৃণমূল নেতা অধরাই থেকে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের সমর্থক আইনজীবীদেরই একাংশ।

বুধবার দুপুরে বারোপেটিয়া এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলে বিজেপির কর্মিসভা চলছিল। একই সময়ে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের থেকেও একশো দিনের কাজের জন্য জবকার্ডের ছবি তোলার কাজ চলছিল স্কুলে। সে সময়েই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণ দাস এবং বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী প্রকাশ রায় বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। প্রধান কৃষ্ণবাবু বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া, কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। বিজেপি নেতা প্রকাশবাবুর পরিবারের তরফে পাল্টা মারধর, হামলার অভিযোগ করা হয় প্রধান কৃষ্ণবাবু সহ নয় জনের বিরুদ্ধে।

বুধবারই পুলিশ বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে। এ দিন আদালতে তোলা হলে বিজেপি নেতা অবশ্য জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। যদিও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন। পুলিশ এক তরফা ব্যবস্থা নিয়েছে বলে দাবি করে বিজেপি নেতা প্রকাশবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের একাংশও।

এ দিন দুপুরে থানায় গিয়ে বারোপেটিয়া নতুনবস গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের দাবি জানান জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। তাতেই সামিল ছিলেন তৃণমূলের আইনজীবীরাও।

এই ঘটনাতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শাসকদলের অন্দরে। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে তদন্ত এখনও চলছে। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, ‘‘অভিযোগ দায়ের হলে তদন্ত করেই পদক্ষেপ হয়। সেই প্রক্রিয়া এখনও চলছে।’’

ঘটনা হল এ দিন যে আইনজীবীরা থানায় গিয়ে প্রধান কৃষ্ণবাবুর গ্রেফতারি দাবি করেছেন, তাঁদের সিংহভাগই তৃণমূলপন্থী বলে পরিচিত। তাতেই শাসকদলের অন্দরে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে। যদিও, তৃণমূল নেতা তথা বার অ্যসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজিৎ সরকার বিষয়টির সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন। অভিজিতবাবু বলেন, ‘‘কে তৃণমূল কে বিজেপি সেটা এ ক্ষেত্রে কোনও বিষয়ই নয়। আইনজীবীরা সকলে একটি পরিবারের মতো। এক সহকর্মী আইনজীবীকে পুলিশ গ্রেফতার করল, অথচ তাঁর পরিবারের দায়ের করা অভিযোগে কোনও পদক্ষেপ হল না কেন তা জানতে গিয়েছিলাম। নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছি।’’ তাঁর গ্রেফতারি দাবি করে দলের আইনজীবী নেতাদের একাংশের সরব হওয়া প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কৃষ্ণবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি নেতা অনৈতিক কাজ করেছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি। এর বেশি কিছু বলার নেই।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘এই ঘটনায় পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে এবং পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত।’’

কৃষ্ণবাবু এবং প্রকাশবাবু দু’জনেই অবশ্য নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি নেতারাও। তাঁদের দাবি, অপেক্ষাকৃত লঘু অভিযোগে দলের নেতাকে গ্রেফতার হতে হয়েছে, কিন্তু তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে মারধর, হামলা, শ্লীলতাহানির মতো অভিযোগ থাকলেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি।

বিজেপি নেতা আইনজীবী প্রকাশবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমাদের বৈঠক চলার সময়ে আচমকা প্রধান তথা তৃণমূল নেতা সঙ্গীদের নিয়ে ঢুকে আমাদের বৈঠকের অনুমতি আছে কিনা জানতে চায়, তারপরেই হামলা করে। মহিলাদের শ্লীলতাহানিও করা হয়৷ অথচ পুলিশ কোনও পদক্ষেপই করেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP tmc police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE