Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গৌতম দেবের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের নালিশ বাম-বিজেপির

দলের প্রার্থীর সমর্থনে ডাকা নাগরিক সভায় মন্ত্রী হিসাবে বাসিন্দাদের আমন্ত্রণ জানানোয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙের অভিযোগ তুলল সিপিএম এবং বিজেপি। বৃহস্পতিবার রাতে পুরসভার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রচারের অঙ্গ হিসাবে একটি প্রশ্ন-উত্তরের নাগরিক সভা ডাকা হয়। সেখানে দলের তরফে এলাকার বাসিন্দাদের কাছে বাংলায় লেখা একটি আমন্ত্রণ বিলি করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩০
Share: Save:

দলের প্রার্থীর সমর্থনে ডাকা নাগরিক সভায় মন্ত্রী হিসাবে বাসিন্দাদের আমন্ত্রণ জানানোয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙের অভিযোগ তুলল সিপিএম এবং বিজেপি।

বৃহস্পতিবার রাতে পুরসভার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রচারের অঙ্গ হিসাবে একটি প্রশ্ন-উত্তরের নাগরিক সভা ডাকা হয়। সেখানে দলের তরফে এলাকার বাসিন্দাদের কাছে বাংলায় লেখা একটি আমন্ত্রণ বিলি করা হয়। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের জেলা সভাপতি হিসাবে গৌতমবাবু ওই সভায় বাসিন্দাদের আমন্ত্রণ না জানিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী হিসাবে আমন্ত্রণ জানিযেছেন। নিজের সরকারি পদকে ব্যবহার করে এমন প্রচার করাটা পুরোপুরি নির্বাচনী বিধিভঙের সামিল। দুপুরে প্রথম সিপিএম তার পরে বিজেপির তরফেও একই অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়।

শিলিগুড়ি পুরভোটের রিটার্নিং অফিসার তথা মহকুমা শাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। মডেল কোড অব কন্ডাক্ট (এমসিসি) সেলের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে তৃণমূল কংগ্রেসকে নোটিশ পাঠানো হবে।’’ বিষয়টি যে ভুল হয়েছে, তা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ওই আমন্ত্রণপত্রে ত্রুটি থেকে গিয়েছে। দলের জেলা সভাপতির বদলে আমার পরিচয় মন্ত্রী হিসাবে লেখা ছিল। আমরা তা সংশোধন করেছি।’’ তিনি জানান, কর্মীদের একাংশের ভুলে বিষয়টি হয়েছে। আগামীতে রাজনৈতিক পরিচয় দিতেই যাতে সব আমন্ত্রণপত্র ছাপানো হয়, সেই নির্দেশ সবাইকে দিয়েছি।

এদিন দুপুরে প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই অভিযোগ তোলেন বামেদের মেয়র পদপ্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘মন্ত্রী নিজের পদ ব্যবহার করে একের পর এক বিধিভভ্গ করে চলেছে। কয়েকদিন আগে, সিআইআই-র সভায় গিয়ে ভোটের আগে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন। এবার বাসিন্দাদের সভায় ডাকছেন মন্ত্রী হিসাবে। আমরা কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ সেই সঙ্গে সি‌আইআই-র প্রতিনিধি দল তাঁদের সঙ্গে দেখা করে অনুষ্ঠানটি করে ভুল করেছেন বলে অশোকবাবুরা এদিন দাবি করেছেন।

এবারে ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন রঞ্জনশীল শর্মা। সিপিএম প্রার্থী করেছেন নকুল সরকার এবং বিজেপি তুফান সাহাকে। ইতিমধ্যে এলাকার বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙচুরকে ঘিরে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। সিপিএমের অভিযোগ, এলাকায় গায়ের জোরে ভোটে জিততে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। তাই কোনও রকম আইন, বিধি তোয়াক্কা শাসক দলের নেতারা করছেন না।

এদিন বিজেপি’র ৩৭ নম্বর ওযার্ড কমিটির তরফে পুলিশ কমিশনার এবং নিবার্চন কমিশনের কাছে একই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দলের অভিযোগ, এদিন সারদাপল্লির সারদা সেবক সঙ্ঘের কাছে ওই নাগরিক সভা ডাকে তৃণমূল। মন্ত্রীর নামের আমন্ত্রণপত্রে পূর্ব নেতাজিপল্লি এবং সারদাপল্লির বাসিন্দাদের বলা হয়েছে, এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন এবং একটি মডেল ওযার্ডে পরিণত করার লক্ষ্যে তৃণমূলের ওয়র্ড কমিটির তরফে ওই সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভাতে সমস্যা, অভিযোগ এবং মতামত জানিয়ে সকলের সহযোগিতা চাওয়া হয়।

সভার আগে দুপুরে আমন্ত্রণপত্র নিয়ে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। বিজেপি’র ওয়ার্ড কমিটির নেতা শ্যামল সাহা বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী স্পষ্টতই বিধিভঙ্গ করছেন। এটা লুকানোর কোনও জায়গা নেই। প্রশাসনের তরফে যাতে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় সে জন্য পুলিশ, রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE