Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

ভোটের রং দেওয়ালে, ফিকে গাজল

দেওয়ালে দেওয়ালে প়ঞ্চায়েত ভোটের রং দেখে মুখভার বিদ্রোহী মোড়ের মুদির দোকানদার সুশান্ত সাহার। তিনি বলেন, “চার বছর আগে পুরসভা পাওয়ার আনন্দে মেতে ওঠার ঘটনা এখনও স্মৃতিতে তাজা।

শহুরে: কেন পুরসভা হচ্ছে না এই শহর। প্রশ্ন গাজলে। নিজস্ব চিত্র

শহুরে: কেন পুরসভা হচ্ছে না এই শহর। প্রশ্ন গাজলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৪৩
Share: Save:

দিনটি ছিল ২০১৪ সালের ১১ জুন। মালদহের গাজলকে ওই দিনই পুরসভা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। আর সেই ঘোষণা শুনেই আবির খেলায় মেতে উঠেছিলেন শাসক দলের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিলেন তাঁরা। গাজলের আকাশ সবুজ হয়েছিল আবিরের রঙে। কিন্তু এখন সেই রং অনেকটাই ফিকে।

দেওয়ালে দেওয়ালে পঞ্চায়েত ভোটের রং দেখে মুখভার বিদ্রোহী মোড়ের মুদির দোকানদার সুশান্ত সাহার। তিনি বলেন, “চার বছর আগে পুরসভা পাওয়ার আনন্দে মেতে ওঠার ঘটনা এখনও স্মৃতিতে তাজা। আবিরখেলা, মিষ্টিমুখ সবই হয়েছিল। তবে হল না শুধু পুরসভা।” পুরসভা ঘোষণার পরেও পঞ্চায়েত ভোট দিতে হবে বলে আক্ষেপ করেন তিনি। তাঁর মতোই পুরসভা না পেয়ে হতাশ প্রবীণ ব্যবসায়ী গোপাল সরকারও। তাঁর আক্ষেপ, “আমাদের প্রজন্ম গাজলকে পুরসভা হিসেবে দেখে যেতে পারব না।” তাই পঞ্চায়েত ভোটের মুখে পুরসভার দাবি মুখে মুখে ঘুরছে গাজলে। তাতে সামিল সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শাসক ও বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরাও।

মালদহ শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে গাজল ব্লক। এই ব্লকে ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি, গাজলকে পুরসভা করা হোক। ২০১৪ সালের ১১ জুন রাজ্য সরকার গাজলকে পুরসভা হিসেবে ঘোষণা করে। সেই ঘোষণা শুনে খুশিতে মেতে উঠেছিলেন বাসিন্দারা। এমনকী, তৎপর হয়ে উঠেছিলেন প্রশাসনের কর্তারাও। পুরসভার এলাকা চিহ্নিত করা থেকে শুরু করে জনগণনা সবই করা হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গাজল-১ নম্বরের ২১টি বুথ, মাজরার, সাহাজাদপুর, এবং গাজল-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি করে বুথ নিয়ে পুরসভা এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছিল। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “৩০ হাজার মানুষের বসবাস পুরসভা গঠনের অন্যতম শর্ত। গাজলের ২৭টি বুথ মিলিয়ে মোট জনসংখ্যা ছিল ৩৫ হাজারেরও বেশি। এ ছাড়া ওই এলাকাগুলির মধ্যে প্রচুর দোকান, অফিস রয়েছে। ফলে আয়ের ক্ষেত্রেও অসুবিধে নেই গাজলে।”এমনকী, প্রাথমিক সেই রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানো হয়েছিল বলেও দাবি প্রশাসনের কর্তাদের। তবে ওই পর্যন্তই রয়ে গিয়েছে।

পুরসভা হলে ভোল বদলে যাবে গাজলের এমনটাই বিশ্বাস বাসিন্দাদের। কারণ যানজটের সমস্যা থেকে শুরু করে পানীয় জল, নিকাশি, রাস্তা, আলোর সমস্যায় নিত্য ভুগতে হয় মানুষকে। যা পঞ্চায়েতের পক্ষে মেটানো সম্ভব নয় বলে দাবি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের। সাংসদ তথা কংগ্রেস নেত্রী মৌসম নুর বলেন, “রাজ্যসরকার মানুষকে ভুল বোঝানোর জন্য মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে বাস্তবে তা পুরণ হয় না। গাজলে পুরসভার ইস্যুতে আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব।” গাজলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিদায়ী তৃণমূলের প্রভাত পোদ্দার অবশ্য বলেন, “পঞ্চায়েত এলাকা হলেও আমরা পুরসভার মতো পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। গাজলে অবশ্যই পুরসভার প্রয়োজন। আমাদের রাজ্য সরকার সেই চেষ্টাই করছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Gazole West Bengal Panchayat Election 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE