ত্রাতা: অস্ত্রোপচারের পর রঞ্জন মুস্তাফি। নিজস্ব চিত্র
মাত্র একদিন আগে সন্তানের জন্ম দেওয়া এক সঙ্কটাপন্ন প্রসূতিকে ক্লিনিক্যাল পদ্ধতিতে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুললেন বালুরঘাট হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রঞ্জন মুস্তাফি তপন থানার গুরইল এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারা বিবিকে কার্যত বাঁচিয়ে তুললেন।
৩ মার্চ শিশুসন্তানের জন্ম দেওয়ার পরই আনোয়ারার জরায়ু উল্টে গিয়ে যোনিপথ দিয়ে নেমে আসায় প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হতে থাকে। রোগী আশঙ্কাজনক অবস্থায় চলে যান। সেই পরিস্থিতিতে অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি না নিয়ে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ওটি-তে নিয়ে গিয়ে প্রসূতিকে অচেতন করে ক্লিনিক্যাল পদ্ধতিতে (রিপজিশন অব ইউটেরাস) চিকিৎসা করে জরায়ু আগের জায়গায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন চিকিৎসক রঞ্জন মুস্তাফি। প্রাণসংশয়ের সঙ্কট কাটিয়ে তাতেই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।
হাসপাতালের সুপার তপন বিশ্বাস জানান, প্রসূতির জরায়ু স্থান পরিবর্তন করে যোনিপথ দিয়ে নেমে আসার ঘটনা বিরল। আক্রান্ত রোগীর দ্রুত চিকিৎসা না হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ওই চিকিৎসক এবং সহকর্মীদের চেষ্টায় আনোয়ারা বিবি বিপন্মুক্ত ও সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
পেশায় দিনমজুর রসিদুল ইসলামের স্ত্রী আনোয়ারাকে গত ২ মার্চ তপন গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন ভোরে তাঁকে বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ৩ মার্চ সকাল ১০টা নাগাদ স্বাভাবিক ভাবে তিনি শিশু সন্তানের জন্ম দেন। তার পর থেকে তাঁর প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হতে থাকে। চিকিৎসক রঞ্জন বলেন, ‘‘পেট কেটে অস্ত্রোপচারের পরিস্থিতি ছিল না।’’ দেরি না করে তিনি রোগীকে রক্ত দেওয়ার পাশাপাশি ওটিতে নিয়ে যান।
রঞ্জনবাবুর কথায়, আনোয়ারা বিবির আগের চারটি সন্তান রয়েছে। এবারে পঞ্চম সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে ওই বিপত্তি ঘটল। এ বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা, পরপর সন্তান হওয়ার জন্য জরায়ুর ক্ষমতা কমে গিয়ে ওই পরিস্থিতি হতে পারে। তবে ওই ঘটনা খুবই কম। হলে আক্রান্ত প্রসূতির সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনাও খুব বেশি নেই।
স্ত্রীকে ফিরে পেয়ে খুশি দিনমজুর রসিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, হাসপাতালে ডাক্তারবাবুদের আন্তরিক উদ্যোগ ও চেষ্টায় স্ত্রীকে ফিরে পেলাম। হাসপাতাল সুপার জানান, আনোয়ারা ও তার শিশুসন্তান সুস্থ রয়েছে। আজ, মঙ্গলবার তাদের ছুটি হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy