বন্ধ হয়ে রয়েছে বাজার। — নিজস্ব চিত্র।
চায়ের দোকানে এমনকী বাড়িতেও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রকাশ্যে রমরমিয়ে চলছে দেশি, বিদেশি ও চোলাই মদের ঠেক। মুদির দোকানেও প্রকাশ্যে গাঁজা বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর ওই মদ, গাঁজার ঠেকের দৌলতে এলাকায় বেড়ে চলেছে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য। এই পরিস্থিতিতে শনিবার রাতে এলাকার এক যুবককে দুষ্কৃতীরা অপহরণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এর পর থেকেই মদের ঠেক বন্ধে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেছেন চাঁচলের চন্দ্রপাড়া পঞ্চায়েতের কানাইপুর, বলরামপুর, চণ্ডীপুর-সহ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। প্রতিবাদে এ দিন বাজার বন্ধ রাখার পাশাপাশি ঠেক বন্ধের দাবিতে পুলিশকর্তাদের দ্বারস্থও হয়েছেন তাঁরা।
চাঁচলের এসডিপিও অভিষেক মজুমদার বলেন, ‘‘এ সব বরদাস্ত করা হবে না। অবৈধ মদের ঠেক থাকলে তা বন্ধ করা হবে। পুলিশকর্মীর মদত থাকলে তাঁরাও ছাড় পাবেন না।’’
বছর তিনেক আগেও ২০১৩ সাল নাগাদ স্থানীয় এক যুবককে খুন করে তাঁর চোখ উপড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। ওই মদের ঠেকের রমরমাই এ সব অসামাজিক কাজের আঁতুড়ঘর, এই সন্দেহে বাসিন্দারাই জোট বেঁধে ঠেকগুলি ভেঙে দেন। কিন্তু বছর খানেক বাদেই ফের ঠেকগুলি গজিয়ে ওঠে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। কিন্তু সব জেনেও ব্যবস্থা নেওয়া দূরের কথা, তাঁদের একাংশের মদতেই ফের ঠেকগুলি রমরমিয়ে চলছে। এমনকী ঠেকগুলিতে পুলিশকর্মীদের একাংশেরও নিয়মিত দেখা মেলে বলে অভিযোগ। ফলে প্রতিবাদ জানালে উল্টে দুষ্কৃতী, ঠেক মালিকদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
শনিবার রাতে কানাইপুর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় মিঠুন দাসকে তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। কিন্তু রাস্তায় সাইকেল পড়ে থাকতে দেখে বাসিন্দারা তাড়া করায় দুষ্কৃতীরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে গেলেও টাকা ও মোবাইল কেড়ে নেয়।
চন্দ্রপাড়া পঞ্চায়েতের স্থানীয় সিপিএম সদস্য ইয়াদ আলি বলেন, ‘‘ঠেকগুলির জন্য এলাকার পরিবেশ ফের বিষিয়ে উঠেছে। পুলিশ করছেটা কি!’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার বাসিন্দারা কানাইপুরে বাজার করতে যান। সেখানে একাধিক চায়ের দোকানে প্রকাশ্যে মদ বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বাড়িতেও রমরমিয়ে ঠেক চলছে। বলরামপুরে মুদিখানার দোকানেই প্রকাশ্যে গাঁজা বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তাঁরা। মহানন্দা নদী ঘেঁষা এলাকাটির ওপারেই উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার এলাকা। নদী পেরিয়ে এসে দুষ্কৃতীরা ঠেকগুলিতে ভিড় করছে। বাজার থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই রয়েছে জুনিয়র হাই স্কুল। মদ্যপদের দাপটে বাসিন্দাদের পাশাপাশি পড়ুয়ারা আতঙ্কিত হলেও পুলিশ নীরব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy