ছত্রিশ দিন কেটে গিয়েছে, ব্যাঙ্কের লাইনে দুর্ভোগ কমেনি এতটুকুও। বুধবার লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে গোলমালে জখম হলেন এক মহিলা। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। ইসলামপুরের লোধনের ঘটনা। গোলমাল হয়েছে শামুকতলাতেও। রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাঙ্কের একটি মাত্র শাখা রয়েছে শামুকতলায়। এখনও পর্যন্ত সেখান থেকে দু’হাজার টাকার বেশি মেলেনি বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। তা নিয়েও ক্ষোভও তৈরি হয়েছিল। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে এ দিন। যদিও, পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রয়োজন মতো টাকা না মেলার অভিযোগ রয়েছে শিলিগুড়িতেও। শহরের কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় চার হাজার টাকার বেশি মিলছে না বলে অভিযোগ।
এ দিন সকাল থেকেই উত্তর দিনাজপুরের লোধনের স্টেট ব্যাঙ্কের শাখার সামনে লম্বা লাইন ছিল। লাইনেই ছিলেন বছর পঞ্চাশের অর্চনা বিশ্বাস। একলপ্তে বেশি টাকা মিলছে না জেনেও ডাঙি এলাকার বাসিন্দা অর্চনাদেবী বাড়ি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ব্যাঙ্কের শাখায় সকাল থেকে লাইন দিয়েছিলেন তিনি। গত কয়েকদিন ধরে দুপুরের আগে ব্যাঙ্ক থেকে গ্রাহকদের টাকা দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই এ দিন ব্যাঙ্ক খোলার পর থেকেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি। কে কার আগে টাকা তুলবে তা নিয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। সে সময় মাটিতে পড়ে যান অর্চনাদেবী। সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন তিনি। ব্যাঙ্কের ভিতর নিয়ে গিয়ে চোখে মুখে জল ছেটানো হয় বলে অনান্য গ্রাহকরা জানিয়েছেন। পরে তাঁকে লোধন প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন তিনি। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রীতেশ ঝা বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের বাইরে ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল। এক মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁকে ব্যাঙ্কের ভিতর নিয়ে আসা হয়। তাঁর হাতে দ্রুত টাকাও দেওয়া হয়।’’ এ দিনও বিকেল তিনটের আগেই ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা বন্ধ হয়ে যায়।
নোট বাতিলের ঘোষণার পর থেকেই শামুকতলায় ব্যাঙ্কের শাখা থেকে সাধারণ গ্রাহকদের দু’হাজারের বেশি টাকা মেলেনি বলে অভিযোগ। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কার্তিক সান্যাল এ দিন প্রায় দু’ঘণ্টা লাইন দিয়ে পেনশন তুলেছেন। পেয়েছেন মাত্র এক হাজার টাকা। কার্তিকবাবুর অভিযোগ, ‘‘এত দিন ধারে জিনিস কিনে অনেক টাকা দেনা হয়েছে। অথচ ব্যাঙ্ক থেকে মিলল মাত্র এক হাজার। সংসার চালাব কী করে সেটাই এখন প্রশ্ন।’’ সকাল বেলায় ঘণ্টাখানেক গ্রাহকরা তুমুল বিক্ষোভ দেখায় ব্যাঙ্কের এই শাখায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
শিলিগুড়ির কলেজ পাড়ায় এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে আড়াই হাজার টাকা নিয়ে ফিরতে হয়েছে গৃহবধূ মালবিকা দত্তকে। গত সপ্তাহে চার হাজার টাকা পেয়েছিলেন বলে জানালেন। এ দিন ক্ষুব্ধ মালবিকাদেবী বলেন, ‘‘কবে থেকে টাকা মিলবে তাও ব্যাঙ্ক জানাতে পারছে না। টাকা জোগাড়ের চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy