শেষ যাত্রায় প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি।
প্রিয় নেতাকে শেষবারের জন্য দেখতে যে বাড়িটির ভিতরে ও বাইরে কয়েক হাজার মানুষের ভিড় আছড়ে পড়েছিল, ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ফের শূন্যতা ফিরল বাড়ির অন্দরে।
দাদাবাবু নেই। তাই সকাল থেকেই মন ভাল নেই ১৮ বছরের পুরনো কেয়ারটেকার কৃষ্ণ সরকারের। দাদাবাবুর মৃত্যুতে কৃষ্ণ এতটাই ভেঙে পড়েছেন যে এ দিন তিনি দুপুরের খাবার তৈরির জন্য রান্নাই করেননি। বুধবার এমনই দৃশ্য দেখা গেল সদ্য প্রয়াত রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির বাড়ির অন্দরমহলে। প্রিয়বাবুর শেষকৃত্য হওয়ার পর এ দিন ভোরে ছেলে মিছিলকে নিয়ে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে বিমানে চেপে দিল্লি চলে গিয়েছেন স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। দুপুরে পরিবারের লোকেদের নিয়ে সড়কপথে কলকাতার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান প্রিয়বাবুর দুই ভাই সত্যরঞ্জন দাশমুন্সি ও অসীমরঞ্জন দাশমুন্সিও। ফলে কেয়ারটেকার কৃষ্ণের অধীনে থাকা কালিয়াগঞ্জের শ্রীকলোনি এলাকার দাশমুন্সি বাড়িতে আবার সেই শূন্যতা।
কৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘দাদা গত ন’বছর ধরে অসুস্থ থাকলেও তিনি বেঁচে ছিলেন। তিনি একদিন সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন, সেই আশাতেই সবাই বুক বেঁধে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু দাদা ফিরলেন মৃত অবস্থায়। বৌদিমণি, মিছিল-সহ পরিবারের সকলে এই শোক সামলাতে পারছেন না। তাই দাদাবাবুর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িতে তাঁরা থাকতে পারলেন না বলেই জানিয়েছেন।’’
প্রিয়বাবুর বাড়ির আনাচে কানাচে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের নানা স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে। সুস্থ থাকাকালীন কালিয়াগঞ্জে থাকলে স্ত্রী দীপা ও ছেলে মিছিলকে নিয়ে বাড়ির দোতলার একটি বড় ঘরে থাকতেন প্রিয়বাবু। বাড়ির নীচতলার একাধিক ঘর, সিড়িঘরের আনাচে কানাচে ও দেওয়ালে প্রিয়বাবুর বিভিন্ন সময়ের রাজনৈতিক ও সরকারি কার্যক্রমের নানা ছবি, সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও দলের তরফে দেওয়া শংসাপত্র ও মানপত্র ঝুলছে। সাংসদ থাকাকালীন সংসদে তাঁর বক্তব্যের একাধিক বই, জুতো, পুরনো পোশাক সহ নানা সামগ্রী যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। দীপাদেবীর নির্দেশে এদিন সকালে প্রিয়বাবুর শোওয়ার ঘর তালা দিয়ে দিয়েছেন কৃষ্ণ। তিনি বলেন, ‘‘দাদাবাবুর বহু স্মৃতি অযত্নে পড়ে থেকে নষ্ট হতে বসেছে। তাঁর স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে এগুলি সংরক্ষণ হওয়া উচিত।’’
একই মত কালিয়াগঞ্জ পুরসভার প্রাক্তন কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অরুণ দে সরকারেরও। তিনি বলেন, ‘‘প্রিয়বাবুর বাড়ির কোনও ঘরে তাঁর স্মৃতি বিজড়িত সমস্ত সামগ্রীকে সংরক্ষণ করে একটি মিউজিয়াম তৈরির ব্যাপারে দীপাদেবীর সঙ্গে আলোচনা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy