এ ভাবেই দু’জনকে ঘোরানো হয় গোটা গ্রাম। ছবি: সংগৃহীত।
বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে দুই আত্মীয়ের। যুবক থাকতেন ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে। এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা করতে মালদহের কালিয়াচকে এসে জুটল অপবাদ! পরকীয়া করছেন দু’জন! এই অভিযোগে ওই যুগলকে হেনস্থার অভিযোগে ওঠে গ্রামবাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে। সালিশি সভার নিদানে গলায় জুতো এবং ঘুঁটের মালা পরিয়ে দু’জনকে ঘোরানো হল গোটা গ্রাম। মাথাও কামিয়ে দেওয়া হয় দু’জনের। এই ঘটনায় মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ। আরও আট জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটি গত ১২ জুলাইয়ের। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই যুগলকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। মামলা ওঠে আদালতে। মালদহ আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবজ্যোতি পাল বলেন, ‘‘নির্যাতিত যুবক–যুবতী, দু’জনেই বছরখানেক আগে বিয়ে করেছিলেন অন্যত্র। তবে কিছু দিন আগে দু’জনেরই বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যুবক ফেরিওয়ালার কাজ করতেন রাঁচীতে। যুবতী কালিয়াচকেই থাকেন। গত ১২ জুলাই কালিয়াচকে ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন যুবক। কিন্তু, পরকীয়া সন্দেহে এলাকার মাতব্বরেরা সালিশি করেন।’’ তবে এক বার নয়, তিন-তিন বার সালিশি সভা বসিয়ে দু’জনের উপর শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়ার পরেও তাঁদের চিকিৎসা করানো হয়নি। এলাকার মাতব্বরেরা যুবক-যুবতীর মাথা কামিয়ে গলায় জুতো ও ঘুঁটের মালা পরিয়ে গ্রাম ঘোরান।
খবর পেয়ে কালিয়াচক থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ ১৯ জনকে এই ঘটনার অভিযুক্ত করে। তাঁদের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক মামলা দায়ের হয়। ১১ জনকে মালদহ আদালতে হাজির করানো হলে তাঁদের সাত দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২০ জুলাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy