বেসরকারি কোনও লন্ড্রি নয়, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করা ছ’জোড়া ট্রেনের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কামরার যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য দেওয়া চাদর, বালিশের ওয়ার্ড ইত্যাদি এ বার থেকে ধোওয়া হবে স্টেশন চত্বরেই। বৃহস্পতিবার এই স্টেশন চত্বরে রেলের ‘মেকানাইজড লন্ড্রি’র উদ্বোধন করলেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার রঞ্জিত সিংহ বিরদি। তিনি বলেন, “বেসরকারি ‘লন্ড্রি’তে ধোওয়া বিছানার চাদর, বালিশের ওয়ার্ড ইত্যাদির পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছিল। সে কারণেই উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ২ কোটি টাকা ব্যয় করে অত্যাধুনিক লন্ড্রি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। ভবিষ্যতে এই লন্ড্রির পরিকাঠামো আরও বাড়ানো হবে।”
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন চত্বরের এই লন্ড্রিতে প্রতিদিন অন্তত এক হাজার চাদর ধোওয়া সম্ভব হবে। ধোওয়া চাদরগুলি পাহাড়িয়া এক্সপ্রেস, গরিব নওয়াজ এক্সপ্রেস, আম্রপালি এক্সপ্রেস সহ ছ’জোড়া ট্রেনে ব্যবহার করা হবে। রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, ২০১১ সালে নিউ জলপাইগুড়িতে লন্ড্রি তৈরির কাজ শুরু হয়। অত্যাধুনিক পাঁচটি যন্ত্রের সাহায্যে চাদর-সহ অন্য জিনিস ধোওয়া, শুকোনো, ইস্ত্রি এবং ভাঁজ করা হবে। ব্যবহার করা চাদরগুলি জীবাণুমুক্ত করার কাজও করবে অত্যাধুনিক যন্ত্র। একবার ব্যবহারের পরেই বিছানার চাদর, হাত মোছার তোয়ালে, বালিশের ওয়ার লন্ড্রিতে ধোওয়া হবে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় যাত্রীদের ব্যবহার করা কম্বলগুলি দু’মাসে একবার ধোওয়া হবে বলে রেল সূত্রে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এই লন্ড্রির ঊদ্বোধনের ফলে উত্তরপূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ট্রেনগুলির জন্য বেসরকারি লন্ড্রি ব্যবহারের আর প্রয়োজন নেই বলে এ দিন জেনারেল ম্যানেজার জানিয়েছেন। চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি ধোওয়ার বরাত দেওয়ার জন্য এত দিন টেন্ডার করা হতো। নিয়ম মতো টেন্ডারে সর্বাপেক্ষা কম দর যে সংস্থা দেয় তাকেই বরাত দেওয়া হয়। একটি চাদর পিছু আট টাকা দেওয়া হতো।
জেনারেল ম্যানেজারের কথায়, “কে কত কম দর দিতে পারে তা নিয়ে প্রতিযোগিতায় এতটাই দর কমে যেত, যে আদৌও ব্যবহৃত জিনিসপত্র কতটা ভাল ভাবে ধোওয়া হতো তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সে কারণেই যাত্রীদের অভিযোগ আসত। এবার থেকে রেল নিজেই ধোওয়ার দায়িত্ব নেওয়ায় পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আর কোনও অভিযোগ থাকবে না।”
এ দিন কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম অরুণ কুমার মিশ্র সহ অনান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী নভেম্বর মাসেই শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত ফের টয়ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে বলে জেনারেল ম্যানেজার আশা প্রকাশ করেছেন। পাগলাঝোরা এলাকায় রেল লাইন ভাঙা থাকায় বর্তমানে শিলিগুড়ি থেকে গয়াবাড়ি এবং দার্জিলিং থেকে ঘুম পর্যন্ত টয় ট্রেন চলাচল করে। ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক সংস্কারের কাজ শেষ হলেই, ক্ষতিগ্রস্ত লাইনও মেরামত করার কাজ শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। কাজ তিন মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে আধিকারিকরা আশাবাদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy