Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

তিনশো টাকার জন্য হাতে কোপ, গ্রেফতার দু’জনকে

পাম্পসেটের ভাড়া বাবদ বকেয়া ছিল ৩০০ টাকা। বিষয়টিকে সামনে রেখে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে তৃণমূল কর্মী দীপঙ্কর দাসের বাঁ হাত কেটে নেওয়ার নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আলিপুরদুয়ারের শামুকতলার বোরাগাড়ির বাসিন্দা দীপঙ্করের দাদা শঙ্করবাবু ওই অভিযোগ করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার ও শামুকতলা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৪ ০৪:০০
Share: Save:

পাম্পসেটের ভাড়া বাবদ বকেয়া ছিল ৩০০ টাকা। বিষয়টিকে সামনে রেখে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে তৃণমূল কর্মী দীপঙ্কর দাসের বাঁ হাত কেটে নেওয়ার নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আলিপুরদুয়ারের শামুকতলার বোরাগাড়ির বাসিন্দা দীপঙ্করের দাদা শঙ্করবাবু ওই অভিযোগ করেছেন।

শুক্রবার তিনি বলেছেন, “এলাকায় আমরা দীর্ঘ দিন ধরে তৃণমূল কংগ্রেস করি। পঞ্চায়েত ভোটে ভাই সক্রিয় ভাবে এলাকায় কাজ করে। আরএসপি প্রার্থীর বিরোধিতা করে প্রচার করেছে। তা নিয়েই আমাদের উপরে ক্ষোভ ছিল। তাই পাওনা ৩০০ টাকার বিষয়টি নিয়ে ঝগড়ার অছিলায় ভাইয়ের উপর হামলা করা হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “পুরোটাই রাজনৈতিক চক্রান্ত। না হলে ৩০০ টাকার জন্য কেউ হাত কেটে নেওয়ার চেষ্টা করে? আমরা পুলিশকে সব জানিয়েছে।” যদিও আরএসপির দাবি, পড়শির ঝামেলাকে তৃণমূল ভোটের আগে রাজনৈতিক রং লাগিয়েছে। ঘটনার পর অভিযুক্ত নলিন দাস, প্রকাশ দাসকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুই জনই এলাকায় আরএসপি কর্মী বলে পরিচিত। পুলিশ সূত্রে খবর, দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। জখম দীপঙ্করবাবু ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পাল্টা দীপঙ্করবাবুর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আলিপুরদুয়ার এসডিপিও বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, “দুই পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেছে। দুই জনকে ধরা হয়েছে। তদন্ত হচ্ছে।”

বৃহস্পতিবার ঘটনার পরে গুরুতর জখম দীপঙ্কর দাসকে আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে ভর্তি যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কোচবিহারের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। আতঙ্কে, ভয়ে এখনও অনেকটাই সিঁটিয়ে দীপঙ্কর। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “পাম্পসেটের ভাড়ার ৩০০ টাকা বাকি ছিল। একে সামনে রেখে ওঁরা যা করল ভাবতেই পারছি না। বাঁ হাতটা কেটে নেওয়ার চেষ্টা করল।” বড়মাপের অস্ত্রোপচারের পর এক হাতে ব্যান্ডেজ, আরেক হাতে স্যালাইন চলছে ওই যুবকের। এই অবস্থাতেই তিনি বলেন, “বাঁচব কি না বুঝতে পারছিলাম না। রক্ত ফিনকি দিয়ে বেরোচ্ছিল। হাতটা ঝুলে ছিল। মনের জেদ এবং চিকিৎসকদের জন্য বেঁচে গিয়েছি।” দীপঙ্করের চিকিৎসার সমস্ত খরচ তৃণমূল বহন করে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলার পর্যবেক্ষক সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “দীপঙ্কর আমাদের দলের কর্মী। ওঁর চিকিৎসার খরচ দলের। তবে আমাদের কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পুলিশকে টহলদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।” যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে ভাটিবাড়ি পঞ্চায়েতের আরএসপি-র উপপ্রধান অলোকা দাস বলেন, “পুরোটাই দুই প্রতিবেশীর গোলমাল। তৃণমূল কংগ্রেস ইচ্ছাকৃত ভাবে এতে রাজনীতির রং লাগিয়ে এলাকায় পরিবেশকে উত্তপ্ত করছে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, দীপঙ্কর খেতে জল দেওয়ার জন্য ৬০০ টাকায় পড়শি এক আত্মীয়ের কাছ থেকে পাম্পসেটটি ভাড়া নিয়েছিল। পরিবারের সদস্যরা আরএসপি কর্মী, সমর্থক বলে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন। পাম্পসেটের জন্য এলাকার তৃণমূল কর্মী দীপঙ্কর ৩০০ টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন। ঘটনার দিন তাঁর বাকি ৩০০ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সে দিন সেই টাকা আদায়কে কেন্দ্র করেই গোলমালের সূত্রপাত।

অন্য বিষয়গুলি:

samuktala three hundred rupees dipankar das
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE