অ্যাপোলো-কাণ্ডে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের ভূমিকা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব নিতে চাইছে না রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কোনও পেনাল কমিটিই। মূলত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ওঠা গাফিলতি সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে ওই কমিটি। বর্তমানে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে মোট ১৩টি পেনাল কমিটি রয়েছে। কিন্তু তাদের কেউই তদন্ত করতে না চাওয়ায় বিপাকে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল।
পুলিশের তদন্ত শেষ। স্বাস্থ্য দফতরের দু’টি তদন্ত কমিটিও ইতিমধ্যে তাদের রিপোর্ট পেশ করেছে। কিন্তু চিকিৎসকদের গাফিলতি কতটা, তা খতিয়ে দেখার কথা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের। আর সেখানেই আটকে গিয়েছে তদন্ত। লালবাজার সূত্রের খবর, ডানকুনির যুবক সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করে তারা তিন জন চিকিৎসকের গাফিলতি খুঁজে পেয়েছিল। কোন চিকিৎসকের গাফিলতি কতটা, বা কোনও চিকিৎসকের আদৌ কোনও গাফিলতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে ফাইল পাঠিয়েছিল পুলিশ।
রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক কর্তা বলেন, ‘‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দ্রুত গতিতে তদন্ত শেষ করা উচিত ছিল। কিন্তু কোনও পেনাল কমিটির কোনও চিকিৎসকই এই তদন্তের ভার নিতে রাজি হচ্ছেন
না। এক মাস হতে চলল ফাইল পড়েই আছে।’’
কাউন্সিল সূত্রের খবর, অভিযুক্ত তিন চিকিৎসকের কাছে ইতিমধ্যেই কারণ দর্শানোর চিঠি গিয়েছে। তিন চিকিৎসক জবাব দিয়েছেন। নথিপত্র নিয়ে দেখাও করে গিয়েছেন। কিন্তু তার পর আর কাজ এগোয়নি। কাউন্সিলের কোনও পেনাল কমিটিকে কোনও তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হলে তারা তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠায় জেনারেল কাউন্সিলে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিভিন্ন পেনাল কমিটির দায়িত্বে থাকা রাজেন্দ্রনাথ পাণ্ডে, ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রদীপ নিমানির মতো চিকিৎসক-সদস্যরা এই তদন্তের দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। রাজেন্দ্রনাথ পাণ্ডে বলেন, ‘‘আমি যে পেনাল কমিটির দায়িত্বে তার অন্যতম সদস্য চিকিৎসক মাখনলাল সাহা অ্যাপোলো কাণ্ডের তদন্তে গঠিত সরকারি কমিটিতে ছিলেন।’’ প্রদীপ নিমানির মন্তব্য, ‘‘আমাকে কেউ কোনও দায়িত্ব দিতে চায়নি।’’ তা হলে তিনি কি এই তদন্তের ভার নেবেন? নিমানির কথায়, ‘‘তেমন পরিস্থিতি এলে ভাবা যাবে কী করব।’’ ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। গোপালকৃষ্ণ ঢালি সরকার গঠিত তদন্ত কমিটিতে ছিলেন এবং স্বাস্থ্য কমিশনেও রয়েছেন। তাই তাঁর দায়িত্বে থাকা পেনাল কমিটিকেও দায়িত্ব দেওয়া যায়নি।
কাউন্সিল সূত্রের খবর, এই ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে সরব হয়েছিলেন। তাই কোনও চিকিৎসকই ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। আবার অভিযুক্ত চিকিৎসকেরা কেউ প্রভাবশালী, কারও সম্পর্কে সতীর্থদের প্রবল সহানুভূতি রয়েছে। সব মিলিয়ে ফাইল নড়ছেই না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy