ফাইল চিত্র।
সাংসদ, বিধায়ক ছাড়া নারদ-কাণ্ডে এর আগে মন্ত্রী বলতে শুধু শোভন চট্টোপাধ্যায়কে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। স্টিং অপারেশনে ঘুষের ঘটনায় ওই তদন্তকারী সংস্থা এ বার তাদের দফতরে রাজ্যের তিন-তিন জন মন্ত্রীকে তলব করল। আর বুধবার নিজাম প্যালেসে সিবিআই অফিসারদের মুখোমুখি হন স্টিং অপারেশনের হোতা ম্যাথু স্যামুয়েল।
এ দিনই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে ই-মেল পাঠিয়ে ইডি জানিয়েছে, অগস্টে তাঁদের হাজিরা দিতে হবে আলাদা আলাদা দিনে। অগস্টের ৪ তারিখে শুভেন্দুবাবু, ৯ তারিখে ফিরহাদ ওরফে ববি এবং ১১ তারিখে সুব্রতবাবুকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
ফিরহাদ এ দিন বলেন, ‘‘এখনও নোটিস পাইনি। পেলে যাব।’’ সুব্রতবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও জানিয়ে দেন, নোটিস পাননি। ইডি-র তলবের বিষয়ে শুভেন্দুবাবু কোনও কথাই বলতে চাননি।
শুধু ইডি নয়, নারদ-কাণ্ডের তদন্তে সিবিআইয়ের তৎপরতাও বহাল আছে। তারা এর আগে সুব্রতবাবুকে ডাকলেও তিনি যাননি। এ দিন তারা সুব্রতবাবু এবং হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নোটিস পাঠিয়ে অগস্টের প্রথম সপ্তাহে তাদের দফতরে হাজির হতে বলেছে। সিবিআইয়ের ডাকে এ দিনই কলকাতায় আসেন নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু। নিজাম প্যালেসে তাঁকে চার ঘণ্টা ধরে জেরা করেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রের খবর, তাঁর কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের টাকা এখনও কেউ তাঁকে ফেরত দেননি বলে ম্যাথু এ দিন জানিয়েছেন তদন্তকারীদের। ঠিক হয়েছে, কবে কোথায় কী ভাবে কাকে ঘুষ দেওয়া হয়েছিল, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ম্যাথুকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট জায়গায় গিয়ে সেই ঘটনার পুনর্গঠন করা হবে।
নিজের পরিচয় লুকিয়ে সাংবাদিক ম্যাথু একটি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের বেশ কিছু মন্ত্রী, সাংসদ ও পুলিশ অফিসারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অভিযোগ, সেই সংস্থাকে বিভিন্ন ধরনের ‘সুযোগ-সুবিধা’ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ম্যাথুর কাছ থেকে মোটা টাকা ঘুষ নেন এই সব প্রভাবশালী ব্যক্তি। দু’দিক থেকে সেই মামলারই তদন্ত চালাচ্ছে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই এবং ইডি।
আরও পড়ুন: শালবনির জমি ফেরাতে চায় জিন্দল
নারদ-কাণ্ডে এর আগে রাজ্যের দমকলমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে তলব করেছিল ইডি। ব্যস্ত থাকায় তিনি হাজিরা দিতে পারেননি। তাঁকে ২৫ জুলাই আবার ডেকে পাঠানো হয়েছে। নারদ-কাণ্ডে বিধায়ক ও কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদ এবং তাঁর দাদা তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদকেও এর আগে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। তাঁরা হাজিরা দিয়েছেন। তাঁদের কাছে আরও কিছু নথি চাওয়া হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর। ইডি-র তলবে সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছেন অন্যতম অভিযুক্ত আইপিএস অফিসার এস এম এইচ মির্জাও।
ইডি-র পাশাপাশি ঘুষ-কাণ্ডের পুনর্গঠনের মাধ্যমে তদন্তে এগোতে চাইছে সিবিআই। ২০১৪ সালে ম্যাথু যেখানে যেখানে গিয়ে মন্ত্রী, সাংসদ, অফিসারদের হাতে টাকা তুলে দিয়েছিলেন, সেই সব জায়গায় আবার ম্যাথুকে নিয়ে যাবেন তদন্তকারীরা। কে তোয়ালে দিয়ে মুড়ে টাকা নিয়েছেন, কে কে কাগজে জড়িয়ে নিয়েছিলেন, সেই সব খুঁটিনাটি জানতে চাওয়া হবে তাঁর কাছে। টাকা নেওয়ার সময়ে মন্ত্রী-সাংসদদের কে কোথায় বসে ছিলেন, ম্যাথুকে সেই সব প্রশ্নেরও জবাব দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy