সকাল থেকেই কাউন্টারে প্যাকেট হাতে দাঁড়িয়ে আছেন কৃষকরা। জমির মাটি পরীক্ষা করাতে নদিয়ার ধানতলা থানার দলুয়াবাড়ি কালীপুর আঞ্চলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কৃষি ও বাউল মেলা ভিড়ে-জমজমাট।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই মেলার একটি সংস্থা ভ্রাম্যমাণ মাটি পরীক্ষা কেন্দ্র খুলেছে খবর পেয়ে ভিড়গাছি, দত্তপুলিয়া, যুগলকিশোর-সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষকেরা এসেছেন দলে-দলে। কুলগাছি-দরাপপুরের বাসিন্দা নারায়ণ মণ্ডল বলেন, “আমার ১৮ বিঘা চাষের জমি রয়েছে। গাঁদা ও রজনীগন্ধা ফুল এবং সর্ষের চাষ করছি। কিন্তু জমিতে এই চাষই উপযুক্ত না অন্য কিছু করলে ভাল হবে, সেটা জানা দরকার। কয়েক দিন আগে বেলুড় মঠে চাষ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলাম। সেখানে চাষের আগে মাটি পরীক্ষা করানোর কথা বলা হয়েছিল। এত দিন সেই সুযোগ হয়নি। এখানে মাটি পরীক্ষা করানো হচ্ছে শুনে চলে এসেছি।” আয়োজক সংস্থা ইফকো-র তরফে কৃষিবিজ্ঞানী রামেশ্বর রাও বলেন, “আমরা দু’দিন এই মাটি পরীক্ষা করব। সঙ্গে সঙ্গে এর রিপোর্ট দিয়ে যাব। কৃষকেরা যে বুঝতে পারছেন মাটি পরীক্ষাটা জরুরি, এটাই অনেক।”
তিন দিনের এই মেলার উদ্বোধন করেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সমীর পোদ্দার। উপস্থিত ছিলেন নাবার্ডের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার চঞ্চল মিত্র, জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার সৈকত দত্ত প্রমুখ। চঞ্চলবাবু বলেন, “মাটি পরীক্ষা করাটা খুব জরুরি। জমিতে কী চাষ ভাল হবে জানলে নানা রকমের সার দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এতে খরচ কমবে।” মেলার অন্যতম আয়োজক পরাণ সরকার বলেন, “আমাদের এই এলাকাটি কৃষি প্রধান এলাকা। এখানকার অধিকাংশ মানুষই কৃষির সঙ্গে যুক্ত। অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল, এলাকার চাষিদের মাটি পরীক্ষা করানো। সেটা সম্ভব হয়েছে। এদিন দেড়শোর বেশি কৃষক মাটি পরীক্ষা করিয়েছেন।”
কৃষকদের এই সচেতনতায় খুশি রানাঘাট মহকুমার কৃষি আধিকারিক রঞ্জন রায়চৌধুরীও। তিনি বলেন, “আমরা চাষিদের মাটি পরীক্ষা করার জন্য সচেতন করে থাকি। এ জন্য, বিভিন্ন জায়গায় শিবির করা হয়। কৃষি মেলাগুলিতেও মাটি পরীক্ষা করানো হয়। তবে স্থায়ী ভাবে মাটি পরীক্ষা করানোর জায়গা কম। এই ধরনের উদ্যোগ চাষিদের উপকারে আসবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy