সহায়ক মূল্যে ধান কিনতে এ বার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মাঠে নামাচ্ছে রাজ্যের খাদ্য দফতর।
ঠিক হয়েছে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি চিহ্নিত করে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ধান কিনতে নামানো হবে। কাজের সুবিধার্থে তাদের একটি করে ‘ট্যাব’ দেওয়া হবে। তা নিয়ে গ্রামে-গ্রামে চাষিদের কাছে গিয়ে তাঁরা নাম নথিভুক্ত করবেন। পরে গ্রামের একটি জায়গায় ধান জড়ো করে কেনা হবে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের ৫৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্ঘকে এ জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। দুই জেলা থেকেই ইতিমধ্যে খাদ্য দফতরের কাছে ‘ট্যাব’ চাওয়া হয়েছে। শীঘ্রই সেগুলি চলে আসবে বলে আশ্বাস মিলেছে। গত বছরই নদিয়ায় চার-পাঁচটি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্ঘ ধান কিনেছিল। তবে মুর্শিদাবাদে এই চেষ্টা এ বারই প্রথম। খাদ্য দফতর জানিয়েছে, ধান কেনার জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কুইন্টাল পিছু ৩১.৫০ টাকা করে দেওয়া হবে। রাজ্যের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগম, চালকল এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সাথে চুক্তির প্রক্রিয়া চলছে। চুক্তি হয়ে গেলেই তারা ধান কিনতে নামবে।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, “স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্র, সমবায় সমিতি, চালকলের সঙ্গেই ধান কিনবেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা।” নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তের মতে, “এই উদ্যোগের ফলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা অনেক উপকৃত হবেন।” মুর্শিদাবাদে এ বার ১ লক্ষ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। ইতিমধ্যে ৯ হাজার হেক্টরে ধান কাটা হয়েছে। এই জেলায় এ বার ৩ লক্ষ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ২৫টি স্থায়ী কেন্দ্র খুলে ১ নভেম্বর থেকে খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা ধান কিনছেন। এ ছাড়া ৩১টি চালকল, ৬০টি সমবায় সমিতি এবং ২০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ধান কেনার কাজে লাগানো হচ্ছে।
নদিয়ায় এ বার ধান চাষ হয়েছিল ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে। সবে সেই ধান কাটা শুরু হয়েছে। এই জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ১ লক্ষ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। ১৬টি স্থায়ী কেন্দ্র গড়ে খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা ১ নভেম্বর থেকে ধান কেনা শুরু করেছেন। এ ছাড়া সমবায় সমিতি, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগম ও ৩৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ধান কেনার কাজে লাগানো হবে। স্বভাবতই উৎসাহিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাও।
বহরমপুর ব্লকের রাধারঘাট ১ পঞ্চায়েতের আগমনী সঙ্ঘ মহিলা সমবায় সমিতির সম্পাদক মিশরী দাস বলেন, “সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি। মাঠ থেকে ধান উঠতে এখনও দেরি আছে। ধান উঠতে শুরু করলেই আমরা তা কেনার কাজ শুরু করে দেব।” বহরমপুরের হরিদাসমাটি প্রীতি সঙ্ঘ সমবায় সমিতির সম্পাদক মালা খাতুন বলছেন, “ধান কেনার জন্য সরকার আমাদের যে ট্যাব দেবে, তা ব্যবহার করে কী ভাবে ধান কেনা হবে, তারও প্রশিক্ষণ হয়েছে। এখন মাঠে নামার অপেক্ষা।” রানাঘাট ১ ব্লকে হবিবপুর বহুমুখী সঙ্ঘ প্রাথমিক সমবায় সমিতির সম্পাদক শিখা ভদ্র বলেছেন, “সরকার ধান কিনতে আমাদের কাজে লাগানোয় আমরা খুশি। এতে আমাদের উপকার হবে।” শান্তিপুরে নবলা বহুমুখী সঙ্ঘ প্রাথমিক সমবায় সমিতির সম্পাদিকা কল্যাণী মুখোপাধ্যায়ও বলছেন, “ধান কেনার জন্য জেলা প্রশাসন আমাদের কাজে লাগানোয় সংস্থার লাভ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy