ফের আক্রান্ত দু’জন বৃদ্ধা এবং ঘটনাস্থল সেই বগুলা।
দিন তিনেক আগে, বগুলা কলেজ পাড়ায় খুন হয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। বন্ধ ঘরে, তাঁকে কেউ মুখ চাপা দিয়ে খুন করে গিয়েছিল। সেই খুনের জট ছাড়াতে না ছাড়াতেই রবিবার রাতে একই পাড়ায় ফের এক বৃদ্ধা, সন্ধ্যা সমাজপতির বাড়িতে ঢুকে মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লুঠপাট করে পালাল তিন দুষ্কৃতী। খানিক পরেই খবর মিলল কৌতুকনগরে আরও এক বৃদ্ধা, শম্পা বিশ্বাসের বাড়িতে ঢুকে মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারে দুষ্কৃতীরা। দুই বৃদ্ধাই একা থাকেন।
বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরেই বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। রবিবারের ঘটনার পরে বাসিন্দাদের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে পুলিশের উপর। শুরু হয় বিক্ষোভ। সোমবার বিকেল স্থানীয়রা বগুলা রেল স্টেশন লাগোয়া কয়েকটি নেশার ঠেক গুঁড়িয়ে দেয়। ঠেকগুলি থেকে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে গাঁজা, হেরোইন, কাশির সিরাপ।
প্রশ্ন উঠছে, সাধারণ মানুষ যে ঠেকে হানা দিয়ে গাঁজা-হেরোইন সহজেই পেয়ে গেল, পুলিশ কেন সেখানে পা বাড়ল না? শুধু তাই নয়, একের পর এক বৃদ্ধা আক্রান্ত হলেও পুলিশে ব্যবহার এত গয়ংগচ্ছ কেন?
বুধবার রাতে বগুলা কলেজ পাড়ায় এক বৃদ্ধার ঘরে ঢুকে তাঁর মাথায় আঘাত করে তার পরে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা হয়েছিল। এই ঘটনার দিন পনেরো আগেও একই ভাবে কলেজ পাড়াতেই রাতে বাড়িতে ঢুকে এক বৃদ্ধার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তারও দিন কয়েক আগে সেই একই ভাবে কৈখালির এক বৃদ্ধার বাড়িতে ঢুকে তার মাথায় কোপ মেরে গয়না ও টাকা লুট করে পালায় দুষ্কৃতীরা।
কৌতুকনগরে শম্পাদেবীর বাড়ির সিঁড়ির মুখে একটি ব্যাগ পাওয়া গিয়েছে। তার ভিতরে টর্চ, গামছা মেলে। বাড়ির পাশে ঝোপের ভিতরে মিলেছে একটি সাইকেল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান বৃদ্ধা চিৎকার করে উঠতেই সে সব ফেলে পালিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতী। বৃদ্ধার দাবি, রবিবার সকালে এক যুবক পাট কেনার নাম করে এসে গল্পের ছলে তাঁর কাছে জেনে গিয়েছিলেন বাড়ির খুঁটিনাটি।
এমন ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মানুষ। কলেজপাড়ার সুমিতা সিকদার বাড়িতে একা থাকেন। তিনি বলেন, “একটা ঘটনাতেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না। আমরা তাই আর পুলিশের উপরে ভরসা রাখতে পারছি না।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে বগুলা নেশার আখড়া হয়ে উঠেছে। নেশার টাকার জন্যই লুঠপাট করছে দুষ্কৃতীরা। তারা একলা বসবাস করা বৃদ্ধাদের বেছে নিচ্ছে। পুলিশও মানছে সে কথা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান কোথায়? না, তার সদুত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy