ছবি: সংগৃহীত
বাম সমর্থন ছাড়াই পুরভোটে নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কান্দি পুরসভায় দুই নির্দল কাউন্সিলর দেবজ্যোতি রায় ও তাঁর স্ত্রী সান্ত্বনা রায়।
কান্দি পুরসভার দীর্ঘ দিনের ওই দুই কাউন্সিলর, ১২ এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এ যাবৎ জয়ী হয়ে এসেছেন। পুরভোটের তোরজোড় শুরু হয়ে গেলেও বামফ্রন্টের তরফে দেবজ্যোতি এবং সান্ত্বনাকে কোনও প্রসাতব দেওয়া হয়নি। তাই নির্দল হিসেবেই তাঁরা লড়াই করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
এ বার পুরভোটে বামফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কংগ্রেসের সঙ্গে আসন রফা করে পুরভোটে লড়াই করার। নির্দল ওই দুই কাউন্সিলর যে ওয়ার্ড থেকে লড়াই করেন, এ বার সেখানে বামফ্রন্ট প্রার্থী না দিয়ে কংগ্রেসকে ছেড়ে দিচ্ছে। ফলে সেই তালিকায় দেবজ্যোতি এবং সান্ত্বনার ঠাঁই হচ্ছে না বলেই জানা গিয়েছে।
গত দু’টি পুর ভোটে ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে বামফ্রন্ট ১৬টি আসনে দলীয় প্রতীকে লড়াই করলেও পুরসভার ১২ এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ওই দুই নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করেছিল। বাম সমর্থনেই সান্ত্বনা তিন বার ও দেবজ্যোতি দু’বার কাউন্সিলর হয়েছেন। এ বার কেন বামফ্রন্ট তাঁদের সমর্থন না করে আসন ছেড়ে দিচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাম নেতৃত্বের কাছে এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মেলেনি। বামফ্রন্টের এক নেতা বলেন, “রায় দম্পতিকে বামফ্রন্টের সমর্থন করে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেটা এতো দিনে দলের নেতারা বুঝতে পেরেই তাঁদের সমর্থন করছে না। এর বেশি কিছু বলব না।’’ ১৮ আসনের কান্দি পুরসভায়, গত ভোটে ১৩টি আসন পেয়ে পুরসভার ক্ষমতা দখল করেছিল কংগ্রেস। তৃণমূল ৩টি ও নির্দল ২টি আসন পেয়ে বিরোধী আসনে বসে। বোর্ড গঠনের বছর খানেকের মধ্যে কংগ্রেসের বোর্ডে কোন্দল শুরু হয়। গৌতম রায়ের নেতৃত্ব পাঁচ জন কাউন্সিলর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। নির্দল দেবজ্যোতির সহযোগিতা নিয়ে কংগ্রেসের পুরপ্রধান অপূর্ব সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে। এরই মধ্যে অনাস্থা ভোটের আগেই দলত্যাগের মামলা হয় হাইকোর্টে। কংগ্রেস নেতৃত্ব সেই সময় দেবজ্যোতির স্ত্রী সান্ত্বনাকে পুরসভার সহকারী পুরপ্রধান করে। অনাস্থার কারণে প্রশাসন তলবি সভার আগে ২০১৬সালের ১৭মার্চ পেশায় শিক্ষক নির্দল কাউন্সিলর দেবজ্যোতি অপহৃত হন। তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় রাজ্য জুড়ে। অপহরণের মামলা শুরু হওয়ায় হাইকোর্টের নির্দেশে সান্ত্বনাকে পুরপ্রধানের দায়িত্ব থাকার নির্দেশ দেয়। ক্রমে ওই পুরসভার সব কাউন্সিলরই দল ছেড়ে তৃণমূলে পা বাড়ালেও রয়ে গিয়ে ছিলেন রায় দম্পতি। তা হলে বাম-কং আসন রফা হলেও দুই নির্দল প্রার্থীর ঠাঁই হল না কেন? সান্ত্বনা বলেন, “সাধারণ মানুষ যা চাইবেন সেটাই হবে।” একধাপ এগিয়ে দেবজ্যোতির কথায়, “বামেরা সমর্থন করলে ভাল, আমরা বামপন্থায় বিশ্বাসী। না করলে আমরা একাই লড়ব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy