নিয়মবহির্ভূত ভাবে নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ১,৬৯৪ জন গ্রুপ-ডি কর্মী। — ফাইল ছবি।
নিয়মবহির্ভূত ভাবে ওঁরা চাকরি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। আদালতের রায়ে এ বার চাকরি গেল একাধিক তৃণমূল নেতার! যদিও ওই নেতাদের দাবি, দুর্নীতির সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই। তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছেন, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
নিয়মবহির্ভূত ভাবে নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ১,৬৯৪ জন গ্রুপ-ডি কর্মী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নদিয়ার কল্যাণী শহরের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সঞ্জয় ব্যাপারী। ভুয়ো নিয়োগ তালিকায় ওই তৃণমূল নেতার নাম প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক কল্যাণীতে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে নিয়মবহির্ভূতভাবে শিক্ষা কর্মী নিয়োগ মামলায় চাকরি হারিয়েছেন নদিয়ার ৬১ জন ও মুর্শিদাবাদের ৬২ জন। তাঁদের মধ্যেও রয়েছেন একাধিক তৃণমূল নেতা এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠ। কল্যাণী শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জয় ব্যাপারী তাঁর নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘যে কেউ যে কোনও দলের কর্মী সমর্থক হতে পারেন। তাঁর সঙ্গে দুর্নীতির কোনও সম্পর্ক নেই। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে চাকরি পেয়েছি, যা বলার আদালতে বলব।’’
আদালতের নির্দেশে কাজ হারিয়েছেন মুর্শিদাবাদের রানিনগরের শেখপাড়া বাবুলতলি খলিলুর রহমান বিদ্যানিকেতনের গ্রুপ-ডি কর্মী হানিফ শেখ। তিনিও মুর্শিদাবাদের এক তৃণমূল বিধায়কের ঘনিষ্ঠ। হানিফের দাবি, ‘‘তৃণমূল করি ঠিকই, তবে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চাকরি পাইনি।’’
পূর্ব বর্ধমানের কাদড়া অতুল কৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ে গ্রুপ ডি পদে ছিলেন শান্তনু মালিক। তিনি বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিকের খুড়তুতো ভাই। বিরোধীদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে, প্রভাব খাটিয়ে শাসকদলের নেতাদের মাধ্যমে ‘অবৈধ ভাবে’ এই সব নিয়োগ হয়েছে। জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘টাকার বিনিময়ে শাসকদলের নেতারা চাকরি কেনা বেচা করেছেন। এটা তার প্রমাণ। আমরা তো আগেই বলেছি। তৃণমূল চাকরি চুরি করেছে।’’ যদিও বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বিধায়ক নিশীথ মালিক বলেন, ‘‘শান্তনু আমার খুড়তুতো ভাই। ওর বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। বিচারাধীন বিষয়ে এর থেকে বেশি আর কিছু বলার নেই।’’
নদিয়া, মুর্শিদাবাদ জুড়ে একাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মী আদালতের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সাংগঠনিক সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় বলেন, ‘‘বিচারাধীন কোনও বিষয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেব না। তবে তৃণমূল করলেই দুর্নীতির ছাড়পত্র মিলবে এ কথা কে বলেছে?’’ রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় তুলে আনেন দলনেত্রীর প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘দলের মহাসচিবকে পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেয়াত করেননি। কোনও দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’’ যদিও তৃণমূলের সব দাবি উড়িয়ে দিয়ে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুর্নীতি খুঁজতে গেলে কম্বলের লোম বাছাইয়ের মতো সব বাদ দিতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগে বাদ যাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy