—প্রতীকী ছবি।
সামান্য কারণে অভিভাবকদের সঙ্গে মন কষাকষি। তাতেই তিন কিশোরী নিজেদের জীবন শেষ করে দেওয়ার মতো মারাত্মক পথ বেছে নিতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে গেলেও ঘটনায় বিপর্যস্ত পরিজনেরা। হতবাক শান্তিপুরের বাবলা এলাকার বাসিন্দারাও। অভিভাবকেরা অল্পবিস্তর শাসন করলে বা বকুনি দিলে ছেলেমেয়েরা যদি আত্মহননের কথা ভেবে ফেলে তা হলে সন্তান প্রতিপালনের প্রক্রিয়াটাই যে চালানো মুশকিল তা একবাক্যে মানছেন প্রায় সকলেই।
ওই তিন কিশোরী পরস্পরের আত্মীয়া। তাদের মধ্যে দু’জন স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তারা সম্পর্কে খুড়তুতো বোন। তৃতীয় কিশোরী তাদের পিসির মেয়ে। সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। পারিবারিক সূত্রে খবর, স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে শান্তিপুরের করমচাপুলির বাসিন্দা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীটি তার মায়ের সঙ্গে সপ্তাহখানেক আগে বাবলায় মামার বাড়িতে বেড়াতে আসে। প্রায় সমবয়সী হওয়ায় দুই মামাতো বোনের সঙ্গে তার বন্ধুর মতো সম্পর্ক ছিল। তিন জনেই পরস্পরের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ ছিল।
বুধবার সন্ধ্যায় তারা একসঙ্গে বাইরে বেড়াতে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যা নামায় বাড়ির লোক অনুমতি দেয়নি। তারা তখন বাড়ির ছাদে বসে গল্প করছিল। শীতের মধ্যে দীর্ঘ ক্ষণ ছাদে থাকার পরেও তারা নামেনি। ঠাণ্ডা লেগে যাবে বলে নীচ থেকে তাদের ডাকাডাকি করা শুরু হয়। তাতেও তারা সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ। তখন এক জনের মা ছাদে উঠে তাদের বকাবকি করে এবং ছাদ থেকে নামতে বলে। কিন্তু তাদের তাতে অভিমান হয় বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
বকুনির পরেই তারা ঘরে ঢুকে যায় এবং সকলের অলক্ষ্যে কেরোসিন তেল খেয়ে নেয় বলে অভিযোগ। বেশ কিছু ক্ষণ পরে তারা ঘর থেকে বেরোচ্ছে না দেখে বাড়ির লোকেরা খোঁজ নিতে আসেন। তখন তাঁরা দেখেন, ঘরের মধ্যে কেরোসিনের পাত্রের মুখ খোলা, মেঝেতে কেরোসিন পড়ে আছে। কিশোরীরা গুম হয়ে বসে আছে। তাদের মুখ থেকে কেরোসিনের গন্ধ বের হচ্ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তারা কেরোসিন খাওয়ার কথা স্বীকারও করে। দিশেহারা অভিভাবকেরা তখন দ্রুত তাদের শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সেখানেই তিন জন চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন, ওই তিন কিশোরীর শারীরিক অবস্থা ক্রমশ ভাল হচ্ছে। মনোবিদেরা জানিয়েছেন, বয়ঃসন্ধি অতি স্পর্শকাতর সময়। কিশোর-কিশোরীরা অনেক সময়ে সামান্য ব্যাপারে মানসিক ভাবে বেশি আহত হয়, বাড়াবাড়ি রকম প্রতিক্রিয়াও দেখায়। ভাল জিনিসকেও খারাপ মনে করে। এই সময় অভিভাবকদের যথেষ্ট অনুভূতিশীল, সতর্ক হতে হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy