Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বন্ধ হল নাবালিকার বিয়ে

ঠিক ছিল মঙ্গলবারেই বিয়ে। চুপিসাড়ে আয়োজনও চলছিল তার। কিন্তু সোমবারেই পঞ্চায়েত, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও কন্যাশ্রীদের ত্রিমুখী অভিযানে বন্ধ হল সুতির খিদিরপুরের বছর পনেরোর নাবালিকা ফতেমা খাতুনের বিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
সুতি শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:১০
Share: Save:

ঠিক ছিল মঙ্গলবারেই বিয়ে। চুপিসাড়ে আয়োজনও চলছিল তার। কিন্তু সোমবারেই পঞ্চায়েত, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও কন্যাশ্রীদের ত্রিমুখী অভিযানে বন্ধ হল সুতির খিদিরপুরের বছর পনেরোর নাবালিকা ফতেমা খাতুনের বিয়ে। তবে প্রশাসন ও পুলিশ সঙ্গে না থাকায় এ দিন টানা তিন ঘণ্টা ধরে বোঝানোর পরই মিলেছে বিয়ে বন্ধের আশ্বাস। পঞ্চায়েতের কাছে পাত্রীর বাবা এবং মা দু’জনেই মুচলেকা দিয়েছেন যে, সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা মেয়ের বিয়ে দেবেন না।

সুতি ২ ব্লকের মহেশাইল ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের খিদিরপুর গ্রামে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ফতেমার বিয়ের আয়োজনের খবর কন্যাশ্রীদের কাছে পৌঁছেছিল রবিবার সন্ধেয়। সরকারি ছুটির দিন হলেও সোমবার বেলা ১১টাতেই গ্রামে হাজির হন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী ও কন্যাশ্রী সাহিমা খাতুন, সোনামুনি দাস ও মেহেজাবিন খাতুন। এগিয়ে আসেন পঞ্চায়েত কর্তারাও।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফিল্ড ওয়ার্কার বিপ্লব দাস জানান, বাড়িতে যে বিয়ের আয়োজন চলছে ২৪ ঘণ্টা আগেও তা বোঝার উপায় ছিল না এ দিন। বাবা ইব্রাহিম শেখ ও মা সাবিয়া বিবি দু’জনেই বিড়ি শ্রমিক। চার মেয়ের তিন জনেরই বিয়ে দিয়েছেন। ছোট মেয়ে ফতেমা পাশেই ছাবঘাটি হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। সেই পড়ুয়া মেয়েরই বিয়ের কথা ছিল এ দিন। প্রথমে না মানলেও পরে মা, বাবা দু’জনেই স্বীকার করে নেন, মঙ্গলবার মেয়ের বিয়ের দিন ছিল। আর তার পরেই উপস্থিত পঞ্চায়েত কর্তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “এ বিয়ে দেওয়া যাবে না। বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে মেয়ের তো শারীরিক ক্ষতি হবেই, আইনের চোখেও অপরাধী হবেন মেয়ের বাবা, মা।” প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয় মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যা সাহায্য দরকার তা করবে গ্রাম পঞ্চায়েত। আবার স্কুলে পাঠাতে হবে মেয়েকে।

কন্যাশ্রী সাহিমা বোঝায়, “আপনারা বাবা, মা। মেয়ে ভাল থাকুক, এটাই তো চাইবেন। এই বয়সে মেয়ের বিয়ে মানেই স্বাস্থ্যহানি। আপনার কম বয়সে বিয়ে হয়েছে। কাজেই মা হিসেবে আপনি জানেন কী কী সমস্যায় পড়তে হয়েছে আপনাকে।” এর পরেই মন গলে মায়ের। ততক্ষণে হাজির গ্রামবাসীরাও। টিপছাপ দেন ইব্রাহিম ও সাবিয়া বিবি। বিয়ে বন্ধের সাক্ষী থাকে গোটা গ্রাম। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সুতি ২ ব্লকের সুপারভাইজর বিজয় হাজরা জানান, নাবালিকা বিয়ে একটা বড় সমস্যা সুতিতে। গত ৬ মাসে ২০টি নাবালিকার বিয়ে বন্ধ

করা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage prevention Teenager Girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE