বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক পুলিশের। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
এত দিন কারও হুঁশ হয়নি। স্কুলে নিরাপত্তাজনিত ফাঁকফোঁকরগুলি বন্ধ করার বিষয়ে উদ্যোগী হননি প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা। স্কুলের হস্টেলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সামাউলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে সকলের টনক নড়েছে। সোমবার এলাকার প্রায় ৪০টি বেসরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষকে ডেকে নিরাপত্তার পাঠ দিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। পাশাপাশি, ছাত্র নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা বসানো, নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের মতো বেশ কিছু কাজের তালিকা কর্তৃপক্ষের হাতে ধরিয়ে জরুরি ভিত্তিতে তা পালন করার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, এ বার থেকে আচমকা স্কুল ও হস্টেলগুলিতে পরিদর্শনে যাবে তারা। স্কুল ও হস্টেলের কোথায়-কোথায় সিসি ক্যামেরা বসানো হবে সেটাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে তারা। স্কুল কর্তৃপক্ষও দ্রুত নির্দেশ পালনের আশ্বাস দিয়েছেন। ডোমকলের এসডিপিও মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘বেসরকারি প্রায় কোনও স্কুলেই নিরাপত্তার ভালো ব্যাবস্থা নেই। সিসি ক্যামেরা লাগানোর পাশাপাশি আমরা হস্টেলের পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছি। নিয়মিত আমরা হানা দেব স্কুলে এবং হস্টেলে।’’
পুলিশকর্তারা জানান, ব্যাঙের ছাতার মতো অসংখ্য বেসরকারি স্কুল গজিয়ে উঠেছে। তাতে নিরাপত্তা দূরে থাক, অনেক ক্লাস ঘরে জানালাও নেই। হস্টেলে নেই নিরাপত্তা রক্ষী বা উপযুক্ত পরিকাঠামো। পুলিশের দাবি, স্কুলের ভাল ব্যবসা চলছে ডোমকলে। পরিকল্পনাহীন ভাবে তৈরী বাড়িতে গরুভেড়ার মতো গাদাগাদি করে ছাত্রছাত্রীদের রেখে কেবল মুনাফার দিকে নজর দিচ্ছে স্কুলের মালিক পক্ষ। পড়ুয়াদের নিরাপত্তায় তাদের মন নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যদি পুলিশ এত সব জেনেই থাকে তবে আগেই কেন ব্যবস্থা নিল না? কেন তারা একটি ছাত্রের মৃত্যু হওয়ার পর্যন্ত অপেক্ষা করল? আরও প্রশ্ন উঠেছে, এই পরিকাঠামোহীন স্কুলগুলি অনুমোদন পেল কী করে? প্রশাসন কি পরিদর্শন না-করেই এগিলিকে ছাড়পত্র দিয়েছে? এর উত্তর মেলেনি।
ডোমকলের হাড়ুরপাড়া এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহিনুর রহমানের কথায়, ‘‘আমরা খুব কম সময়ের মধ্যেই গোটা স্কুল চত্বরে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। পুলিশ যে ভাবে নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের নির্দেশ দিয়েছে সেগুলিও যতটা সম্ভব খুব কম সময়েই মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছি।’’ আরেকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুরাবুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই ছাত্রদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন রয়েছি। যেটুকু ঘাটতি রয়েছে তা-ও মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy