Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
চলল না বেসরকারি বাস, খুলল না বহু দোকানপাট, ছুটির দিন নদিয়ায়

অংশত সফল অ-বাধ বন্‌ধ

মাত্র এক দিন আগেই কৃষ্ণনগরে এসে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের তরফে নদিয়া জেলা পর্যবেক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, তাঁরা এই বন্‌ধ সমর্থন করছেন না। কিন্তু তার পরেও সোমবার বন্ধ অনেকাংশেই প্রভাব ফেলল নদিয়া জুড়ে। তৃণমূল সে ভাবে কোথাও বাধাও দেয়নি। 

সরকারি বাস আটকাচ্ছেন বামকর্মীরা। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

সরকারি বাস আটকাচ্ছেন বামকর্মীরা। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১৭
Share: Save:

মাত্র এক দিন আগেই কৃষ্ণনগরে এসে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের তরফে নদিয়া জেলা পর্যবেক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, তাঁরা এই বন্‌ধ সমর্থন করছেন না। কিন্তু তার পরেও সোমবার বন্ধ অনেকাংশেই প্রভাব ফেলল নদিয়া জুড়ে। তৃণমূল সে ভাবে কোথাও বাধাও দেয়নি।

বন্‌ধ সফল করার ডাক দিয়ে সকালে ফুলিয়া ও কৃষ্ণনগরের মতো কিছু জায়গায় মিছিল করে বামেরা। কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ের কাছে সামান্য সময়ের জন্য পথ অবরোধও করা হয়। জেলা পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার জানিয়েছেন, নাকাশিপাড়ায় পথ অবরোধের চেষ্টা করায় ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া গোটা জেলার আর কোথাও কোনও রকমের গোলমাল বা অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই।

বাস: সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে দেখা মেলেনি বেসরকারি বাসের। কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, শান্তিপুর — কোথাও বেসরকারি বাস পথে নামেনি। জেলা বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, রোজ সাতশোর বেশি বাস রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, চাকদহ, করিমপুর-সহ বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। এর মধ্যে কৃষ্ণনগর থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এবং অন্য জেলায় চলাচল করে প্রায় ছ’শো বাস। এ দিন সেগুলি পথে নামেনি। সকালের দিকে করিমপুরের দিকে হাতে গোনা গোটা কয়েক বাস চলেছে। তবে সরকারি বাসের দেখা মিলেছে রাস্তায়।

ট্রেন: সকালে আইএনটিইউসি-র তরফে বন্‌ধের সমর্থনে রানাঘাট স্টেশনে মিছিল করা হয়। পলাশির মতো কোনও-কোনও জায়গায় সামান্য সময়ের জন্য অবরোধও হয়। কি্তু তাতে সার্বিক ভাবে রেল চলাচলে প্রভাব পড়েনি। রানাঘাট, গেদে, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর সব শাখাতেই নিয়মিত ট্রেন চলাচল করেছে। যদিও অন্য দিনের মতো যাত্রীদের ভিড় তত ছিল না।

সরকারি হাজিরা: জেলার প্রায় সব সরকারি দফতরে কর্মীদের হাজিরা ছিল স্বাভাবিক। জেলা প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে চারটি মহকুমাশাসকের দফতর, ব্লক অফিস বা অন্য দফতরে আর পাঁচটা কাজের দিনের মতোই কর্মীরা হাজির হয়েছেন। নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নিধি মালিক বলেন, “জেলা প্রশাসনিক ভবনে হাজিরা ছিল ৯৯ শতাংশ। হাতে গোনা দু’-চার জন বাদ দিয়ে কর্মীরা সকলেই হাজির ছিলেন। জেলার বাকি সব দফতরেও অন্তত ৯৯ শতাংশের মতো হাজিরা ছিল।” রানাঘাটের মহকুমাশাসক মণীশ বর্মা বলেন, “এ দিন আমাদের কার্যালয়ে একশো শতাংশ কর্মীই হাজির ছিলেন।” ফলে কাজকর্ম হয়েছে স্বাভাবিক ভাবেই। যদিও সাধারণ মানুষ কম এসেছেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ছিল খোলা। শিক্ষকেরা যথারীতি হাজির হয়েছেন। তবে কিছু কিছু জায়গায় পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ছিল কম।

দোকানপাট: সোমবার সাপ্তাহিক দোকানপাট বন্ধের দিন হওয়ায় রানাঘাট শহরে বন্‌ধের প্রভাব সে ভাবে বোঝা যায়নি। শহরের আশপাশের বাজার খোলা ছিল। আনাজ এবং মাছের বাজারে বন্‌ধের প্রভাব সে ভাবে পড়েনি। তবে জেলার বহু জায়গাতেই বেশ কিছু জায়গায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, বাদকুল্লার মতো জায়গায় বেশ কিছু জমজমাট বাজার এলাকায় খোলেনি দোকান। ওষুধের দোকানের মতো কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান বাদে কৃষ্ণনগর শহরের সিংহ ভাগ দোকান ছিল বন্ধ। যদিও জেলার অনেক জায়গাতেই বেলা বাড়ার সঙ্গে দোকান খুলতে শুরু করে। তবে মদনপুরের পাইকারি আনাজের বাজার খোলা ছিল। আনাজ বিক্রেতা নিরঞ্জন সরকার বলেন, “ভোরেই মদনপুর বাজারে গিয়ে আনাজ কিনে গ্রামে গ্রামে বিক্রি করতে বেরিয়েছি। কোনও সমস্যা হয়নি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Strike Successful
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE