সৎছেলেকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার মহিলা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সৎমায়ের সম্পর্ক রয়েছে অন্য পুরুষের সঙ্গে। এ কথা জেনে ফেলতেই তাঁকে খুনের অভিযোগ উঠল মহিলার বিরুদ্ধে। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার পাগলাচণ্ডি এলাকার ঘটনা। সৎছেলেকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে পারভিনা বিবি নামে ওই মহিলাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, পারভিনার এটা ছিল অষ্টম বিয়ে।
রবিবার দুপুরে মেঝেতে হাঁটুমোড়া অবস্থায় দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সিলিঙে বাঁধা দড়ির ফাঁস আটকে ছিল গলায়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। মৃতের নাম খোসমহম্মদ সেখ। ২০ বছর বয়সি ওই যুবককে খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর সৎমায়ের বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বুধবার বাড়িতে সৎমায়ের সঙ্গে অন্য এক পুরুষকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন যুবক। তা নাকি ক্যামেরাবন্দিও করে রাখেন তিনি। সৎমাকে জানান, তাঁর ওই সম্পর্কের কথা বাড়ির সবাইকে বলে দেবেন তিনি। অভিযোগ, এর পরই স্বামীর প্রথম পক্ষের সন্তানকে খুনের চক্রান্ত করে পারভিনা।
মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, খোসমহম্মদের বাবা ভাটু শেখ কয়েক বছর আগে দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন। ভাটু নিজে কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী পারভিনা বিবি এবং সন্তানরা থাকেন গ্রামের বাড়িতে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই যুবক সৎ মায়ের বিরুদ্ধে আগে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। এমনকি খেতে না দেওয়ার অভিযোগে সৎমায়ের বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে সরব হন তিনি। সে কারণে তাঁর উপর রাগ এবং ক্ষোভ ছিলই সৎ মায়ের। অভিযোগ, তার পর এই ছবি তুলে রাখার ঘটনার পর ছেলেকে খুনের ছক কষেন পারভিনা। এমনটাই দাবি তাঁর পরিবারের সদস্যদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সকালে প্রতিদিনের মতো চাষের কাজে মাঠে গিয়েছিলেন খোসমহম্মদ। বাড়ি ফিরেও কাজ করছিলেন। ঠিক সেই সময় পারভিনা তাঁকে পিছন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। মাটিতে পড়ার পর যুবকের গলা টিপে ধরেন সৎমা। তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুনের পর গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
ওই ঘটনার পর থেকে প্রথমে খোঁজ পাওয়া যায়নি পারভিনার। পরে নিজেই বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। এর পর পরিবারের বাকি সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে।
মৃতের কাকা হুমায়ুন শেখের কথায়, ‘‘আমার ভাইপোকে ওর সৎমা গলা টিপে খুন করেছে। তারপর গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে। মেঝেতে হাঁটু লেগেছিল। ৬ দিন আগে ওর মা’কে এক অন্য পুরুষের সঙ্গে অশ্লীল অবস্থায় দেখে ফেলেছিল খোসমহম্মদ।’’
ওই ঘটনা প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ঈশানী পাল বলেন, ‘‘পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy