Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Murder

বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে ছেলে খুন

বাবাকে বাঁচাতে গেলে দুষ্কৃতীরা পিটিয়ে মারে ছেলেকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২১ ০৫:০২
Share: Save:

বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হলেন কলেজ পড়ুয়া ছেলে। আহত বাবা ও আর এক ছেলেকে বেনিয়াগ্রাম স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
ফরাক্কার কেন্দুয়াতে শুক্রবার রাতে এই ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করেছে। মৃতের নাম শাকিল মোস্তাক (২৩)। তিনি ফরাক্কা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ, বাবার ব্যবসায়িক কোনও গোলমালের জেরেই বাবাকেই হয়ত খুনের পরিকল্পনা ছিল দুষ্কৃতীদের। কিন্তু বাবাকে বাঁচাতে গেলে দুষ্কৃতীরা পিটিয়ে মারে ছেলেকে।

ফরাক্কার এনটিপিসি লাগোয়া গ্রাম কেন্দুয়া। সেখানেই বাড়ি নাজমুল শেখের। বহু দিন থেকেই তিনি এলাকায় পাথর (স্টোন চিপস) সরবরাহের ব্যবসা করতেন। তাঁর ৪ ছেলের এক জন ৬ মাস আগে এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায়। বড় ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ , দ্বিতীয় ছেলে দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া এবং ছোট ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ে। করোনা পরিস্থিতির কারণে সকলেই এখন বাড়িতে।
বড় ছেলে অলিউল আজিম জানান, “পাশেই ফরাক্কা ব্যারাজ ও এনটিপিসি। বাবা প্রতিদিনই রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে বাড়ি ফেরে। এদিনও সাড়ে ৮ টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন বাইকে করে। আমি বাড়ির আশপাশেই আড্ডা দিচ্ছিলাম। তখনই নজরে পড়ে বাড়ি থেকে ১০০ মিটার মত দূরে রেল গেটের কাছে দু জায়গায় দু দল লোক জটলা করে আছে। সংখ্যায় প্রায় জনা ২০ মত। সবাই পরিচিত এবং গ্রামেরই। সকলের হাতেই ছোট ছোট লাঠি। এলাকায় মস্তানি করে বেরানোয় তাদের কাজ। বেশির ভাগই ছিল মদ্যপ অবস্থায়। রাস্তা অন্ধকার। তার মধ্যেই হঠাতই বচসার শব্দ কানে আসে। একটু এগিয়েই দেখি ওরা আমার বাবাকে আটকে জামার কলার ধরে শাসাচ্ছে, টানাটানি করছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে বাবার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে তাকে ছাড়াবার চেষ্টা করি। একজন আমার উপর লাঠি কষে মারতেই আমি ডান হাত তুলে তা আটকাতে গেলে লাঠি পড়ে আমার হাতের উপর। আমার সামনেই বাবাকে লাঠি দিয়ে মাথায় মারতেই বাবা সরে যায়। লাঠি গিয়ে পড়ে তার নাকে। নাক ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। বাবাকে মারছে শুনে তখন বাড়ি থেকে এক বন্ধুকে নিয়ে সেখানে ছুটে আসে ভাই শাকিল। বাবা ও আমাকে ওরা কয়েকজন মিলে চেপে ধরে রেখেছে। শাকিল তার প্রতিবাদ করে বাবাকে বাঁচাতে চেষ্টা করে। তখন কয়েকজন দুষ্কৃতী শাকিলকে জোর করে টেনে নিয়ে যায় পাশেই এক গলির মধ্যে। সেখানেই একাধিক দুষ্কৃতী ভাইকে রাস্তায় ফেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে। মাথায় গুরুতর আঘাত পায় শাকিল। মাথা, চোখ, মুখ ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। একসময় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। এরপরই ভাই মারা গেছে ভেবে দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।”

এরপরই ছুটে আসেন পরিজন ও প্রতিবেশীরা। দুই ভাই ও বাবাকে নিয়ে যাওয়া হয় বেনিয়াগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শনিবার সকালে শাকিলকে পাঠানো হয় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকেই তাকে রেফার করা হয় বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তার। ৪ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy