ফোনে অর্ডার করলেই গাঁজার হোম ডেলিভারি। প্রতীকী চিত্র।
মাঝরাতে গাঁজা চাই? কোনও ‘সমস্যা’ নেই। নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করলে তা পাওয়া যাবে ঘরে বসে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মুর্শিদাবাদ জেলা শহর বহরমপুরে রমরমিয়ে চলছে গাঁজার কারবার। ফোন করে ঠিকানা এবং গাঁজার পরিমাণ বলে দিলে তা পৌঁছে যাবে দোরগোড়ায়। কিন্তু শর্ত একটাই, ক্রেতাকে ‘বিশ্বস্ত’ হতে হবে।
বহরমপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাস মোহনা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া রয়েছে বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, নির্দিষ্ট কয়েকটি সঙ্কেত বললে ওই দোকানগুলি থেকেই চাহিদা মতো পাওয়া যাবে গাঁজার ‘পুরিয়া’। মোহনা বাসস্ট্যান্ড থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে রামেন্দ্রসুন্দ্র ত্রিবেদী সেতুর দিকে প্রায় ৫০০ মিটার এগোলে কান্দি বাস স্ট্যান্ড। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই এলাকার ওভারব্রিজের নীচেও বিক্রি হয় গাঁজা। অবশ্যই এলাকায় তা বিক্রি হয় ‘খাম’ নামে।
এ ছাড়া খাগড়া, গোরাবাজার, কেএন কলেজ ঘাট, গাঁধী কলোনি, কাশিমবাজার-সহ বিভিন্ন এলাকায় গাঁজার বিক্রি রমরমিয়ে চলছে বলে অভিযোগ। খাগড়া এলাকার কাঁসার বাসনের দোকান নরেশ সাহার। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক মাসের মধ্যে মাদকাসক্তদের দাপট এত বেড়েছে যে ঘরের বাইরে কোনও জিনিস রাখার উপায় নেই। ঘর খোলা রাখলেই চুরি হয়ে যাচ্ছে টুকিটাকি জিনিস। আগে ওরা গঙ্গার ধারে গিয়ে মাদক কিনে এ সব খেত। এখন তো ফোনে অর্ডার দিলেও ঘরে বসে গাঁজা পাওয়া যায়।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, অন্ধকার নামলে গাঁজার ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের আনাগোনা শুরু হয়। আবার ফোন করলে মাদক পৌঁছে যায় বাড়িতে। মুর্শিদাবাদের সুতির মাঠ এলাকার রাজেশ দাস নামে এক টোটোচালক বলেন, ‘‘সন্ধে নামলেই মোহনা বাস টার্মিনাসের কাছে গাঁজা কিনতে কলেজ পড়ুয়াদের ভিড় জমতে শুরু করে। এখন তো আবার শুনছি ফোনে অর্ডার দিলেও বাড়িতে বসে গাঁজার পুরিয়া পাওয়া যাচ্ছে।’’
এই সূত্রেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ‘ডেলিভারি বয়’ যেমন বলে দিলেন, ‘‘গাঁজার ক্রেতা শুধু পুরুষরাই নন। পুরিয়া বা খাম যাই বলুন তা কেনেন মহিলাও।’’ কোথা থেকে গাঁজা পৌঁছয় বহরমপুরে? খাগড়ার এক মাদক কারবারি বলেন, ‘‘ফরাক্কা, শমশেরগঞ্জ, ডোমকল এবং জলঙ্গি থেকে কয়েক জনের হাতবদল হয়ে গাঁজা পৌঁছে যায় বহরমপুর শহরের দোকানগুলিতে।’’
এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও অভিযোগ জমা পড়েছে। বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা কিছু অভিযোগ পেয়েছি। বেশির ভাগ জায়গাতেই পুলিশ যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে শহর জুড়ে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।’’
অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এই ধরনের অভিযোগ কেউ কখনও করেননি। এমন কোন তথ্যও আমাদের হাতে নেই। নির্দিষ্ট তথ্য পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy