নিজস্ব চিত্র।
বাজারে এসে গিয়েছে সে!
বহরমপুরের আকাশে পুবালি হাওয়ার ঝোঁক উঠুক আর না উঠুক, মেজ সেজ-সব বাজারেই ডুমো আলোর নিচে ঝলমল করতে শুরু করেছে রুপোলি শস্য। কিন্তু এ তার কেমন চেহারা! আকারে রুপচাঁদার মতো ঝলমলে, সরপুঁটির মতো চকচকে কিন্তু এ তো পদ্মা থেকে উঠে আসা সেই চোখ ধাঁধানো ইলিশ নয়। সাকুল্যে ইঞ্চি ছয়েকের সেই ‘বেআইনি’ ইলিশের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা।
ক’দিন ধরেই মৎস্য দফতরের কর্তাদের কাছে খবর ছিল, ছোট ইলিশে বাজার ছেয়েছে। নড়েচড়ে বসতে সময় লাগলেও শেষতক শুক্রবার সকালে দফতরের কর্তারা পা রাখলেন বাজারে। তবে ওই, মাছের গাল টিপে আদর করার ভঙ্গিতে তাদের দেখেই ছেড়ে দিলেন। বিক্রেতাদেরও নামকাওয়াস্তে সতর্ক করেই প্রথম দিন দায় সারলেন কর্তারা। শুধু জানিয়ে গেলেন, ‘পরের বার দেখলে কিন্তু মাছ বাজেয়াপ্ত করা হবে!’
এ দিন ভোরের আড়মোড়া ভাঙতেই বহরমপুরের নতুন বাজার, ভাকুড়ি, চুনাখালির নিমতলায় মাছের পাইকারি বাজারে হানা দিয়েছিলেন মৎস্য দফতরের কর্তারা। পরে তাঁরা বহরমপুর স্বর্ণময়ী ও গোরাবাজারের নিমতলা খুচরো বাজারেও ছোট ইলিশের খোঁজে হানা দেন। তবে, সব জায়গায় ওই মৃদু ধমক। ‘আর যেন না দেখি’ গোছের সতর্কতা।
অভিযান চালালেও ব্যবস্থা নিলেন না কেন? মৎস্য দফতরের সহ-অধিকর্তা জয়ন্তকুমার প্রধান বলছেন, “এ দিন মূলত আমরা মৎস্য ব্যবসায়ীদের সচেতন করেছি। বলেছি, ৯ ইঞ্চির থেকে ছোট (ওজনে ৫০০ গ্রামের কম) ইলিশ বিক্রি দেখলেই ব্যবস্থা নেব।” তাঁর দাবি, এ দিন বহরমপুরের সব বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা কথা দিয়েছেন, এ বার থেকে বিক্রির নির্দেশিকা মেনে চলবেন তাঁরা। ম্লান গলায় তিনি বলছেন, ‘‘একটু ছাড় তো দিতেই হত!’’
মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী দিনে জেলা জুড়ে আমরা লাগাতার এই অভিযান চালানো হবে। এ ছাড়াও ভাগীরথী ও গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় মৎস্যজীবীদেরও ছোট ইলিশ ধরা বন্ধে সচেতন করা হবে। ইলিশ মাছ ধরা বা বিক্রি করার ক্ষেত্রের নির্দেশ রয়েছে, ৯০ মিলিমিটারের চেয়ে কম জালে ইলিশ মাছ ধরা যাবে না। ২৩ সেন্টিমিটার (৯ ইঞ্চির) কম মাপের ইলিশ ধরা এবং বেচাকেনা করা যাবে না।
শুক্রবার ভোরে বহরমপুর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে স্কেল হাতে নতুন বাজারে হাজির হন মৎস্য দফতরের এক দল আধিকারিক। সেখানে মাছের আড়তগুলিতে ইলিশ মেপে তাঁরা রায় দেন, বাজারে যা এসেছে তা সবই ছোট ইলিশ। আইনত যা ধরা যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy