স্কুল শিক্ষকদের ভরসা করতে হল সেই মসজিদের মাইককেই।
আচমকা বেজে উঠল গ্রামের মসজিদের মাইক। আর তা শুনে পথচলতি মানুষ গেল থমকে, কেউ আবার নেমে পড়লেন সাইকেল থেকে। রান্না করতে করতে মায়েরাও কান খাড়া করে শুনলেন, কোন দুঃসংবাদ নাকি!
—গ্রামের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে জানানো হচ্ছে বিশেষ কারণে শনিবারের গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি বাতিল হয়েছে। সকল পড়ুয়াকে স্কুলে আসতে অনুরোধ করা হচ্ছে। মুসল্লির চেনা গলায় অচেনা প্রস্তাব। বৃহস্পতি এবং শুক্র— দু’টো দিন ছিল ছুটির। ফলে শনিবারটা টেনে দিয়ে তিন দিনের ছুটিতে স্কুল খাঁ খাঁ।
কিন্তু শুক্রবার দুপুরে শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে ফরমান জারি হল মিডডে মিলের পরিদর্শন হবে শনিবার। সব স্কুল খোলা রাখতে হবে এবং রান্না করতে হবে মিডডে মিল। আর তাতেই বিপাকে পড়ল জেলার একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। কারণ একাধিক স্কুলেই শনিবার ছিল স্থানীয় ছুটি। কিন্তু উপায় নেই, কর্তার ইচ্ছায় কর্ম! সন্ধ্যাবেলায় মাথা চুলকে শুরু হল ফোনাফোনি শুরু করেন শিক্ষকেরা। এত ছাত্রের কাছে কী ভাবে খবর পৌঁছাবেন তা নিয়েই ঘাম ঝরতে থাকে কপাল থেকে।
মসজিদের মাইক থেকে এমন প্রচার নতুন নয়, এর আগেও কখনও মৃত্যু সংবাদ, কখনও আবার গ্রামে আগুন লাগা অথবা টিকার প্রচার হয়েছে। এমনকি কারও ছাগল-গরু হারিয়ে গেলেও অনেক গ্রামেই ভরসা মসজিদের মাইক। কিন্তু এ বার স্কুল শিক্ষকদের ভরসা করতে হল সেই মসজিদের মাইককেই।
ডোমকলের মাঝপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিমউল ইসলাম বলছেন, ‘‘হঠাৎ মনে পড়ে মসজিদের মাইকের কথা। এর আগেও দেখেছি বিপদের সময় বড্ড কাজে লাগে মাইকটা।’’
মসজিদের মুসল্লি সৈয়দ সাবিরুল ইসলামকে ফোন করে জানান ব্যাপারাটা। তাতেই হয় মুশকিল আসান। সাবিরুল সাহেব মাইক ফুঁকে ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের গোটা ঘটনা জানিয়ে দেন। শনিবার স্কুল খুলতেই দেখা গেল হাজিরার সংখ্যা অনেক বেশি। ১৭৬ জন ছাত্রছাত্রীর ১১৬ জনই উপস্থিত হয়েছে। মাঝপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়েও কাজ দিয়েছে মুসল্লির মাইক। ১৫৭ পড়ুয়ার মধ্যে ১২৬ জনই হাজির হয় স্কুলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy