রাস্তা তো নয়। যেন চষা খেত। বৃষ্টি হলেই বহরমপুর শহরের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে চুঁয়াপুর রেলগেটের লাগোয়া পথ কাদায় যেন রোলার স্কেটিং রিং। যখন তখন দুর্ঘটনা। আবার শুকনো অবস্থায় ধুলোর ঝড়ে নাজেহাল দশা। উটের পিঠের মতো সে রাস্তার প্রাণ ওষ্ঠাগত।
চুঁয়াপুর রেলগেটের উপর নির্মীয়মান উড়ালপুলের দু’পাশে সেই রাস্তা ভেঙেই রোজ শতাধিক অ্যাম্বুল্যান্সের চলাচল। গত কয়েক বছর ধরে এটাই যেন দস্তুর। অথচ, পথের উপর মোরাম বিছিয়ে দিলে, অথবা পিচ-পাথরের আস্তরণ দিয়ে ঢেকে দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। যানজটের নরকযন্ত্রণা থেকে সাধারণ পথচারী ও রুগীদের রেহাই দিতে বছর আড়াই ধরে আজ পর্যন্ত পুরসভা ও রেল— কেউই ওই উদ্যোগটকু নেয়নি। বহরমপুর পুরসভার প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর নাডুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উড়ালপুল নির্মাণের জন্য পুরসভা এলাকার রাস্তাটি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে রেলকে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার পর থেকে নির্মীয়মান উড়ালপুলের দু’ পাশের রাস্তা দেখভালের দায়িত্ব রেলের।’’ তা হলে দায়িত্ব শেষ? আমতা আমতা করে তিনি যোগ করছেন, ‘‘দেখি জনস্বার্থে পুরসভার পক্ষ থেকে রেলকে লিখিত ভাবে অনুরোধ করা হবে।’’ সংশ্লিষ্ট এলাকার রেলের ট্রাফিক ইন্সপেক্টার রঞ্জিতকুমার ঘোষ অবশ্য দায়সারা ভাবে বলে রাখছেন, ‘‘সমস্যা সমাধানের জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।’’বহরমপুর শহরের সীমান্ত বরাবর রয়েছে শিয়ালদহ-লালগোলা শাখার রেল পথ। শহরে ঢোকার মুখে চুঁয়াপুরে ও পঞ্চাননতলায় দুটি রেল গেট আছে। ওই রেল লাইনে সারা দিনে ৩২ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। ফলে এত বার রেলগেট বন্ধ থাকায় তৈরি হয় তীব্র যানজট। ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে দু’টি রেলগেটের উপর উড়ালপুল নির্মাণের দাবি ওঠে স্বাধীনতার পর থেকেই। ২০১৩ সালে রেল প্রতিমন্ত্রী হয়েই অধীর চৌধুরীর উদ্যোগে ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। দু’টি উড়ালপুল ও ‘আন্ডারপাস’ নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালে একটি নির্মাণ সংস্থাকে কাজের বরাত দিয়ে শিলান্যাসও করা হয়।
নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য ওই এলাকার ১২৫টি দোকানঘর সরিয়ে দেওয়া হয়। বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনেক আবেদনেও রাজ্য সরকার ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ না দেওয়ায় উড়ালপুল ও ‘আন্ডারপাস’ নির্মাণের কাজ শুরু করা যায়নি।’’ বিধানসভার অধ্যক্ষকে বলেও কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে হাইকোর্টে দায়ের করা মামলার রায়ের ঠেলায় বছর আড়াই আগে কাজ শুরু হয়েছে।’’ কিন্তু সে কাজ হচ্ছে শামুকের গতিতে। বহরমপুরও রয়েছে বহরমপুরেই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy