Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা

সালিশির মূল অভিযুক্ত অধরা, ক্ষোভ চাঁদপুরে

ঘটনার পর অতিক্রান্ত দশ দিন। কিন্তু, নওদার চাঁদপুর গ্রামের সালিশির ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের খুঁজেই পেল না পুলিশ। ফলে, ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামে। গত ৯ অক্টোবর চাঁদপুর গ্রামের এক মহিলা স্বামীকে ছেড়ে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে বাড়ি ছাড়েন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নওদা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২৪
Share: Save:

ঘটনার পর অতিক্রান্ত দশ দিন। কিন্তু, নওদার চাঁদপুর গ্রামের সালিশির ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের খুঁজেই পেল না পুলিশ। ফলে, ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামে।

গত ৯ অক্টোবর চাঁদপুর গ্রামের এক মহিলা স্বামীকে ছেড়ে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে বাড়ি ছাড়েন। তাঁর সঙ্গে গোলমাল বাঁধায় ফের স্বামীর কাছে ফিরে আসেন তিনি। তাঁর স্বামীও তাঁকে ফিরিয়ে নেন।

স্বামী মেনে নিলেও মানেননি গ্রামের মোড়লরা। সালিশি ডেকে ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীকে ছ’হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সঙ্গে ১০৮ বার কঞ্চির ঘা বসানো হয়। জরিমানার টাকা দিতে না পারায় জোর করে তাঁর স্বামীকে মহিলার চুল কাটতে বাধ্য করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৬০ জন। ১২ অক্টোবর ওই মহিলা সাত জনের নামে নওদা থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু, তার মধ্যে মূল অভিযুক্তরা কেউ নেই। পুলিশ জানিয়েছে, তারা পলাতক। প্রশ্ন উঠছে, এত দিনেও পুলিশ তাদের নাগাল পেল না কেন?

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেই সালিশিতে মূল মাথা ছিল গ্রামের সাহাবুদ্দিন শেখ ও হামিদুল শেখ। সাহাবুদ্দিনের নিদের্শে জরিমানা ও চুল কাটা হয়। হামিদুল বেত্রাঘাতের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

পুলিশ তাদের খুঁজে না পেলেও গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকাতেই লুকিয়ে রয়েছে হামিদুল। কখনও ফাঁকা মাঠে, কখনও তারই কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে দেখা যাচ্ছে তাকে। আর সাহাবুদ্দিন জলঙ্গী পেরিয়ে নদিয়ায় চলে গিয়েছে।

নওদার বিধায়ক ও জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবুতাহের খান বলেন, ‘‘পুলিশ ভাবলে অপরাধীদের ধরতে পারবে না, এটা বিশ্বাস যোগ্য নয়। শাসক দলের মদতেই মূল অপরাধীরা পুলিশের নাগালের মধ্যে থেকেও দিব্যি ঘোরাফেরা করছে।’’

নওদা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি জুলফিকার আলি ভুট্টো বলেন, ‘‘ঘৃণ্য ওই অপরাধীদের পাশে দাঁড়ানোর প্রশ্নই নেই। আমি সম্প্রতি দলীয় মিটিং এ কর্মী সমর্থকদেরও এ বিষয়ে সচেতন করেছি। মূল অভিযুক্তদের যাতে পুলিশ গ্রেফতার করে সে বিষয়ে আমরা পুলিশের কাছে দাবি জানাব।’’ তবে কবে সেই দাবি করবেন, তা জানাননি তিনি। ওই মহিলা বর্তমানে তাঁর বাপের বাড়ি নওদার শ্যামনগরে রয়েছেন। এই ঘটনার পর এখনও তাঁর আতঙ্ক কাটেনি।

মুর্শিদাবাদ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ কুমার দ্বিবেদী জানান, পুলিশ পুলিশ সম্ভাব্য সব জায়গায় অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। তারা দ্রুত জায়গা বদল করছে। তবে খুব শিগ্‌গির তাদের গ্রেফতার করা হবে। কোনও অভিযুক্তই এই ঘটনা ঘটিয়ে রেহাই পাবে না। পুলিশ বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Police arbitration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE