Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

উদ্ধার ১০ লক্ষ জাল টাকা, গ্রেফতার পাঁচ

দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে রবিবার ১০ লক্ষ টাকার জাল নোট উদ্ধার করল পুলিশ। শমসেরগঞ্জ থেকে। এই ঘটনায় একই চক্রের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি। 

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ১১:০৯
Share: Save:

দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে রবিবার ১০ লক্ষ টাকার জাল নোট উদ্ধার করল পুলিশ। শমসেরগঞ্জ থেকে। এই ঘটনায় একই চক্রের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি।

লোকসভা ভোটের আর মাত্র তিন সপ্তাহ বাকি। তার আগে একসঙ্গে এত টাকার জাল নোট উদ্ধার হওয়ায় পুলিশ এবং প্রশাসনের কপালে ভাঁজ পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ধুলিয়ানের মতো সীমান্ত এলাকায় জাল নোট ধরা পড়ার ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু পাঁচঘণ্টার অভিযানে শমসেরগঞ্জের তিনটি জায়গা থেকে যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার করেছে, তা শেষ কবে ঘটেছে, মনে করতে পারছেন না তাঁরা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ফরাক্কার একটি হোটেলে হানা দিয়ে পুলিশ অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলার বাসিন্দা রঘুনাধা নাইডু এবং রাজেশ দেভালাকে সাত লক্ষ টাকার জাল নোট-সহ গ্রেফতার করেছিল। জেরায় পুলিশ জানতে পারে, সেই নোট বৈষ্ণবনগর থেকে আনা হয়েছিল। পরদিন দু’জনের ফরাক্কা থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। রাত্রিবাসের জন্য তারা উঠেছিল ফরাক্কার ওই হোটেলে।

রবিবার সন্ধ্যায় নামো চাচন্ড গ্রামে এক আমবাগানে জাল টাকার লেনদেন হচ্ছে বলে আগাম খবর পেয়েছিল শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশ। সেই মোতাবেক সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ সাধারণ পোশাকে পুলিশ হানা দেয় ওই বাগানে। সন্দেহ হওয়ায় সেখান থেকে পাকড়াও করা হয় আসারুল শেখ নামে বছর সাতাশের এক যুবককে। তার বাড়ি লাগোয়া সাতঘরিয়া গ্রামে। তার দেহ তল্লাশি করে মেলে ৮০টি ২০০০ হাজার টাকার জাল নোট। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়ে দেয় সঙ্গীর নাম। এরপর ওই যুবককে সঙ্গে নিয়েই পুলিশ হাজির হয় পাশে রতনপুরে। পুলিশ হুড়মুড়িয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়ে ধৃত আসারুলকে নিয়ে। সে-ই পুলিশকে চিনিয়ে দেয় সঙ্গী ফটিক শেখকে। তার কাছ থেকে মেলে ৭০টি ২০০০ টাকার জাল নোট। দু’জনেই একই জায়গা থেকে এনেছিল ওই জাল নোট।

পুলিশ এরপর দু’জনকে নিয়ে যায় শমসেরগঞ্জ থানায়। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। সূত্রের খবর, প্রথমে তারা কিছু বলতে চাইছিল না। কিন্তু পুলিশের কাছেও নিশ্চিত খবর ছিল, ধুলিয়ান শহরেই লুকিয়ে রয়েছে যারা আসারুলদের জাল নোট দিয়েছিল।

এদিকে বহুক্ষণ ধরে জিজ্ঞাসাবাদেও ধৃতেরা কিছু বলতে না চাওয়ায় পুলিশও কিছুটা ‘কড়া’ হয়। তাতেই ফল মেলে। ধৃতদের একজন জানিয়ে দেয়, জাল নোটের সরবরাহকারীদের নাম। ধুলিয়ানের সার্কাস ময়দানের কাছে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিল তারা। রাত ৯টা নাগাদ সেখানে হানা দেয় পুলিশ। পালানোর সুযোগ পায়নি তিনজন। পুলিশ পাকড়াও করে মোদাশ্বর আলি ওরফে টিঙ্কু এবং রুহুল শেখ ওরফে জুলুমকে। দু’জনেরই বাড়ি বৈষ্ণবনগরের দেওনাপুরে। ধৃত আরেকজনের নাম রবিউল ইসলাম। বছর পঞ্চান্নর রবিউলের বাড়ি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুরে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৩৫০টি ২০০০ টাকার জাল নোট। সব মিলিয়ে উদ্ধার হয় প্রায় ১০ লক্ষ টাকার জাল নোট।

পুলিশ জানায়, সকলের চোখে ধুলো দিয়ে ধুলিয়ানেই গত তিন মাস ধরে জাল নোটের কারবার চালাচ্ছিল ওই পাঁচজন। ধৃতদের কাছে কয়েক হাজার টাকাও মিলেছে। ধৃত বাংলাদেশির কাছে অবশ্য বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে। সেটি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ জানান, এই চক্রে জড়িত এক পাণ্ডার খোঁজ চলছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE