জন্মাষ্টমী। ইসলামপুরে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমি তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের অবির্ভাব দিবস হিসেবে জন্মাষ্টমীকে মহা সমারোহে পালন করা হয়। তবে এ বছর তিথি অনুযায়ী বুধবার ও বৃহস্পতিবার দু'দিন জন্মাষ্টমী হলেও জেলার অধিকাংশ মঠ ও আখড়ায় বৃহস্পতিবার জন্মাষ্টমী পালন করা হয়েছে। লালবাগ শ্রীপাট কুমারপাড়ার রাধামাধব মন্দিরে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামে। বেলা গড়াতেই বাড়তে থাকে ভক্ত সমাগম। একটা সময় তিল ধারণের জায়গা থাকে না মন্দির প্রাঙ্গণে।
উলুধ্বনি, ঘণ্টাধ্বনি, শঙ্খধ্বনি আর বৈষ্ণব ধর্মালম্বীদের রাধাকৃষ্ণের জয়ধ্বনিতে মন্দির চত্বর ভরে ওঠে। বহরমপুরের বাসিন্দা তারক দাস বলেন, ‘‘রাধামাধবের স্নানযাত্রা, জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমীর দিনে বিগত ৩০ বছর ধরে প্রভুর দর্শনের জন্য এখানে আসছি। বছরের এই দিনগুলোতে দৈনন্দিন জীবনের সব ব্যস্ততাকে দূরে সরিয়ে রেখে ছুটে আসি তাঁর টানে। দীর্ঘ দিন ধরে প্রভুর প্রসাদ পেয়ে আসছি। আয়োজনের কোনও ত্রুটি নেই।’’
তিনি জানান, আজকের ভোগের তালিকায় ছিল অন্ন,পরমান্ন, পুষ্পান্ন-সহ নানাবিধ ভোগের আয়োজন। দীর্ঘ কাল ধরে এই পরম্পরা রক্ষা করা হচ্ছে।
রাধামাধব মন্দির ১৩তম সেবায়েত বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “বর্তমানে মন্দির-সহ ১৭ একর জমির উপর ভরসা করেই চলে নিত্যপুজো ও নিত্যভোগের আয়োজন। এখান থেকে অভুক্ত কেউ ফিরে যান না। পূর্বে রাধামাধবের ভোগের জন্য ভক্তদের কাছ থেকে কোনওরকম অর্থ সাহায্য গ্রহণ করা হতো না।’’
তিনি বলেন, ‘‘অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে গত দু’বছর ধরে প্রসাদ গ্রহণের জন্য আংশিক অর্থ ভক্তদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে। তবে বছরের বিশেষ দিনগুলিতে ভক্তদের কাছ থেকে কোনও নিদিষ্ট অনুদান নেওয়া হয় না। প্রতি বছর জগন্নাথদেবের স্নান যাত্রার দিন কয়েক হাজার ভক্ত সমাগম হয়ে থাকে। এছাড়াও দোল পূর্ণিমা, জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমীর দিনে বহু মানুষের ভিড় হয়।”
শ্রীজীব গোস্বামীর শিষ্যা হরিপ্রিয়া ঠাকুরানী বৃন্দাবন থেকে এসে ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে কুমারপুর গ্রামে রাধামাধব বিগ্ৰহের প্রতিষ্ঠা করেন বলে কথিত রয়েছে। তার পর থেকে রাধামাধবের গৌরবের কোনও ব্যাঘাত কখনওই ঘটেনি। অপর দিকে জেলার অন্যতম ২৫০ বছরের প্রাচীন মুর্শিদাবাদ থানার জাফরাগঞ্জের বৈষ্ণব ধর্মের দক্ষিণ ভারতীয় রামানুজ সম্প্রদায়ের আখড়া। ১৭৬০ সালে মোহান্ত লছমনদাস আচারি এই আখড়া নির্মাণ করেন। বৃহস্পতিবার মহা ধুমধামে সেখানেও পালিত হয় জন্মাষ্টমী। সকাল থেকেই জন্মাষ্টমী উপলক্ষে স্থানীয়দের ভিড় চোখে পড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy