সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইটভাটা। আর সেই ভাটাতেই মাটির জোগান দিতে গিয়ে কোপ পড়ছে তিন ফসলি জমিতে। এমনকি, সবুজে ভরা মাঠ, বাগান কিছুই রক্ষা পাচ্ছে না মাটি মাফিয়াদের হাত থেকে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কেবল তিন ফসলি জমি বা বাগান নয়, এখন মাটির টানে পাকা বাড়ির পাশ থেকেও কয়েক ফুট গর্ত করে কেটে নাওয়া হচ্ছে মাটি। কিছু দিন আগেও মাটি কাটা রুখতে মাঠে নামতে হয়েছিল ডোমকলের নরজপুর এলাকার চাষিদের। মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে এখনও তাঁদের অনেকে এই শীতের রাতে জেগে পাহারা দিচ্ছেন মাঠ। মাঠে ট্রাক্টর নামলেই হইহই করে তেড়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
চাষিদের দাবি, ‘‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম যার মাটি সে বিক্রি করছে। ফলে আমাদের কিছুই করার নেই। পরে দেখলাম, মাটি বিক্রির হিড়িক এতটাই বেড়েছে যে মাঠের মাঝেও জেসিবি ও ট্রাক্টর নামিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। আর এর ফলে ফসল নষ্ট হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই আমরা দলবেঁধে মাঠে নেমেছি।’’
কেবল এক বার নয়, এক জমি থেকে তিন থেকে চার বারও মাটি কেটে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে অনেক এলাকায়। আর এর ফলে পাশের জমির মাটি বছর বছর গলে নামছে গর্ত হয়ে যাওয়া পাশের জমিতে। ডোমকলের জুগিন্দা এলাকার জমাল মণ্ডলের দাবি, ‘‘জমি সেই বাপ-ঠাকুর্দার আমলের। কখনও ভাবিনি, সেই জমির মাটি বিক্রি করে খেতে হবে। কিন্তু চারপাশের জমি যখন কেটে গর্ত করে ফেলল তখন বাধ্য হয়েই আমিও মাটি বিক্রি করেছি। এখন আর জমিতে তেমন ফসল হয় না। বর্ষাকালে মাস কয়েক জমিতে জল জমে থাকছে।’’
কেবল ডোমকল নয়, রানিনগর কিংবা জলঙ্গিতেও ছবিটা মোটামুটি একই রকম। সর্বত্রই মাটির চড়া দামের টোপটা কাজে লাগাচ্ছে মাটি মাফিয়ারা। কেবল টোপ নয়, কোনও এলাকায় প্রথম কোনও জমির মালিকের মাটি কাটা হয়ে গেলেই মাফিয়াদের লোক পৌঁছে যাচ্ছে পাশের জমির মালিকের বাড়িতে। তারা বোঝাচ্ছে, এখনই মাটি বিক্রি না করলে তাঁর জমির মাটিও বর্ষায় গলে পড়বে পাশের জমিতে। সেই টোপও গিলছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy