প্রতীকী ছবি।
গাঁধীগিরি এ বার গাঁয়ের মাঠে। মাঠে, ঝোপে-ঝা়ড়ে বসে কাউকে পেট খোলসা করতে দেখলেই উপহার লজেন্স আর গোলাপ! শুক্রবার থেকে ভোরে সে সব হাতে মাঠেঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সরকারি কর্মীরা। মাঠ থেকে ঘটি হাতে ফিরতি লোকজনকে পেলেই হেসে ধরিয়ে দিচ্ছেন হাতে। কর্তাদের আশা, লজ্জা পেয়ে তাঁরা বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করে ব্যবহার করবেন।
মুর্শিদাবাদকে ‘নির্মল জেলা’ করে তোলার লক্ষ্যে সোমবার থেকে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরও কাজে নামানো হয়েছে। এ দিন থেকে জেলার সব স্কুলে সপ্তাহব্যাপী ‘নির্মল অভিযান’ চলবে বলে জানিয়ে জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘ছ’হাজার স্কুল- পড়ুয়াকে বিভিন্ন ভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও পরিদর্শকের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এ দিন নিজের স্কুল শিক্ষক, পরিচালন সমিতির সদস্য, রাঁধুনিদের শপথবাক্য পাঠ করান। পড়ুয়াদেরও সচেতন করে অভিভাবক, শিক্ষক ও পড়ুয়াদের নিয়ে গড়া হবে নজরদারি কমিটি।’’
নদিয়া আগেই ‘নির্মল’ তকমা পেয়েছে। জেলা প্রশাসনের দাবি, প্রত্যেক বাড়িতে শৌচাগার তৈরি হয়েছে। মোট তিন লক্ষ। তার জন্য মিলেছে রাজ্য সরকার ও রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতি। কিন্তু শৌচাগার কি সকলে ব্যবহার করছেন? জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, শৌচাগারের অভ্যেস অনেকেই রপ্ত করেছেন। যদিও এখনও প্রচার চালানো হয়। জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত জানান, গ্রাম স্তরে গড়া হয়েছে ভিলেজ হেল্থ অ্যান্ড স্যানিটেশন কমিটি। তারা ছোট আলোচনাচক্র করে, প্রচার চালিয়ে লোকজনকে বোঝায়। ব্লক এবং জেলা স্তরেও নানা অনুষ্ঠান করা হয়।
মুর্শিদাবাদও এ বার এই পথে হাঁটতে শুরু করেছে। জেলাশাসক জানান, ছা ত্রছাত্রীদের একটি খাতা দেওয়া হবে। কার বাড়িতে শৌচাগার আছে, কার বাড়িতে নেই, কার বাড়িতে শৌচাগার থেকেও ব্যবহার হয় না, কেন ব্যবহার হয় না, সব তাতে লিপিবদ্ধ করা হবে। শৌচাগার না থাকায় বা ব্যবহার না করায় কী অসুবিধায় পড়তে হয়, তা পড়ুয়ারা চিঠি লিখে অভিভাবকদের জানাবে। নির্মল স্কুল সপ্তাহের মধ্যেই সেই সব বিষয় নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের বৈঠক হবে। স্কুল, বাড়ি ও পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার অঙ্গীকারপত্র বিলি হবে, স্কুল সাফাই অভিযান চলবে। শেষ দিন নির্মল স্কুল সপ্তাহের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে হবে প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘শ্রমিকদের বাড়িতে শৌচালয় না থাকলে তা করে দেবেন বলে ইটভাটা মালিকেরা জানান। এনটিপিসি, সিমেন্ট কারখানা ও বিড়ি সংস্থাগুলো শৌচালয় বানিয়ে দেবে বলে কথা দিয়েছে।’’ জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে দু’লক্ষ শৌচালয় করতে হবে। জেলাশাসকের দাবি, ‘‘জানুয়ারির মধ্যে সব হয়ে যাবে।’’ জেলার ২৫০ বাজারে সুলভ শৌচালয় করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy