মহম্মদ সোহরাব। ছবি: নিজস্ব চিত্র
শুরুটা হয়েছিল ধুলিয়ানের হাত ধরে।
গত তিন মাসে একের পর এক পুরসভা এবং জেলা পরিষদ খোয়ানোর পরে রবিবার হাতছাড়া হয়েছে বহরমপুরও।
অধীর চৌধুরীর খাসতালুকের সঙ্গে এ বার তাঁর প্রিয় পাত্ররাও হাত ছেড়ে যেতে শুরু করলেন।
জঙ্গিপুরের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মহম্মদ সোহরাবের দলত্যাগকে সে ভাবেই দেখছেন দলের কর্মীরা।
বিধানসভা নির্বাচনে জঙ্গিপুরে জাকির হোসেনের কাছে হেরে গিয়েছিলেন সোহরাব। বলেছিলেন রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার কথাও। গত মাস চারেকের মধ্যে দলের কোনও সভায় দেখাও যায়নি তাঁকে। অজুহাত দিয়েছিলেন, অসুস্থতার। দলত্যাগ করে অবশ্য তাঁর সহজ লক্ষ্য হয়ে গিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। ‘জোটের নামে বজ্জাতি’র জন্যই দল ছাড়ছেন বলছেন তিনি। অভিযোগ করেছেন, ‘‘অধীর লড়াইয়ের নামে জঙ্গিপুরে আমাকে হারানোর চক্রান্ত করেছেন।’’ সেই চক্রান্তের শোধ তুলতেই দলের এই ‘দুঃসময়টা’ বেছে নিলেন?
কংগ্রেসের এক জেলা নেতা বলছেন, ‘‘আসলে কী জানেন তো, ঘাতক লুকিয়ে থাকে ভিতরে, সুযোগ পেলেই সে ঝলসে ওঠে। সোহরাবেরা সেই ধরনের চরিত্র! মহম্মদ সোহরাব বরাবরই সুবিধাবাদি রাজনীতি করে এসেছেন।’’ দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দল বদলের জন্য সোহরাব প্রথমে দেখা করেন মুকুল রায়ের সঙ্গে। তাঁর আর্জি মুকুল পৌঁছে দিয়েছিলেন দলনেত্রীর কাছে। সম্মতি মিলতেই এ দিন দল বদল করে বসলেন এআইসিসি’র সদস্য। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মান্নান হোসেন বলেন, “সোহরাবের মতো শিক্ষিত মানুষ দলে আসা প্রয়োজন।’’ মহম্মদ সোহরাব এর আগে পাঁচ বার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। গত পাঁচ বছর ছিলেন দলের পরিষদীয় দলনেতা।
২০০১ সালে নির্দল হিসেবে লড়াই করেও হেরে গিয়ে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হন প্রদেশ সভাপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশেই। পরে অবশ্য সেই জঙ্গিপুর থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রথমে প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং পরে অভিজিত মুখোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন তিনি। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরও প্রণববাবুর সঙ্গে তার সেই সম্পর্কে ভাটা পড়েনি। গত সেপ্টেম্বর জঙ্গিপুরে প্রণববাবুর শেষ দুটি অনুষ্ঠানেও হাজির থেকেছেন তিনি। এমন ঘোর কংগ্রেস কর্মী কি পেতে শেষ বয়সে দল বদলালেন? সোহরাব হাসছেন, বলছেন, “এই বয়সে আর কি পাওয়ার আছে? মানুষের জন্য কাজ করতে চাই বলেই এলাম তৃণমূলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy