একে একে ঘরে ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিক। — ফাইল চিত্র।
ইতিমধ্যে ঢাকে কাঠি পড়েছে গণতন্ত্রের বড় উৎসব পঞ্চায়েত নির্বাচনের। অন্যদিকে, দিন কয়েক পরেই কোরবানি ইদ। দুই উৎসবের ব্যবধান মাত্র এক সপ্তাহের। ফলে ভিন রাজ্য থেকে ঘরে ফেরার হিড়িক পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে দলে দলে ঘরে ফিরছেন জেলার পরিযায়ী শ্রমিকেরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য জেলার বহু মানুষ ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। শ্রমিকদের সংখ্যার হিসেব জেলা প্রশাসনের কাছে না থাকলেও নেহাতই সেই সংখ্যা কয়েক হাজারের কম নয়।
বেশ কিছু দিন ধরেই ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ। হরিহরপাড়ার স্বরূপপুর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন। তিনি কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। প্রায় এক বছর ধরে কেরলে ছিলেন তিনি। বুধবার কেরল থেকে বাড়ি ফিরেছেন রুহুল। জানা গিয়েছে, তাঁর এক বৌদি এ বছর গ্রাম পঞ্চায়েতে এসইউসি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর হয়ে ভোটের প্রচার শুরু করেছেন তিনি। রুহুল বলেন, ‘‘ইদে বাড়ি আসার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। তবে পঞ্চায়েত ভোটে একটি ভোটও গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভোটকে সামনে রেখে বাড়ি এসেছি।" ওই গ্রামের বাসিন্দা আনারুল সেখ, গুড্ডু মেহেনারাও কেউ রাজস্থানে কেউ বেঙ্গালুরুতে শ্রমিকের কাজ করেন। দুই উৎসবকে সামনে রেখে ঘরে ফিরেছেন গুড্ডু, আনারুলরা। অন্যদিকে, হরিহরপাড়ার শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম, রঞ্জু সেখরা প্রায় পাঁচ-ছ'বছর বেঙ্গালুরুতে রাজমিস্ত্রীর যোগাড়ের কাজ করেন। গত মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা। বাড়ি ফিরেই কেউ তৃণমূল কেউ জোট প্রার্থীর হয়ে ভোট প্রচার শুরু করেছেন তাঁরা। রবিউলের বাবা সাফাজুল সেখ বলেন, "অন্যান্যবার ইদের দু-এক দিন আগে ছেলে বাড়ি ফেরে। এবার ভোটের জন্য সপ্তাহ খানেক আগেই বাড়ি ফিরেছে।" রঞ্জুর স্ত্রী আসেদা বিবি বলেন," ও ইদের দু-চার দিন আগে বাড়ি ফেরে। ইদের দু-এক পর আবার চলে যায়। এবার ভোটের জন্য কয়েকটা দিন বাড়িতে বেশি থাকবে।"
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গ্রাম বাংলার ভোট তথা পঞ্চায়েত নির্বাচনে একটি ভোটেরও গুরুত্ব অনেক। ফলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা পরিবারের লোকেদের কাছে আবেদন করেছিলেন পরিবারের লোকেদের ঘরে ফিরতে। অনেকেই রাজনৈতিক কর্মীদের আবেদনে সাড়া দিয়ে ঘরে ফিরছেন।
জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী তথা জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাস বলেন, " জেলার অনেক মানুষ ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। তাদের অনেকেই রোজার ইদে বাড়ি না ফিরলেও কোরবানির ইদের আগে বাড়ি ফেরেন। ইদের এক সপ্তাহ পরেই ভোট। ফলে পরিযায়ী শ্রমিকেরাও উৎসাহ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।" সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, " রাজ্য কর্মস্থান নেই বলে জেলার হাজার হাজার মানুষকে ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজের জন্য যেতে হয়। ইদ ও ভোটের আগে শ্রমিকদের অনেকেই বাড়ি ফিরছেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলব কর্মসংস্থানের কথা মাথায় রেখে ভোট দিতে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy