মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আবাস যোজনা-সহ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ সফরে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুর্শিদাবাদের দুই তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগপত্র জমা হল থানায়। পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছেন রেজিনগরের আন্দুলবেড়িয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মহাদেব দে। তাঁর দাবি, অ্যাকাউন্টে ৬০ হাজার টাকা ঢুকতেই তাঁকে পঞ্চায়েত থেকে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি পঞ্চায়েত অফিসে যাওয়ার পর প্রধান রবীন ঘোষ ১০ হাজার টাকা চান বলে অভিযোগ মহাদেবের। এই ঘটনা পাঁচকান হতেই এলাকার আরও অনেকে অভিযোগ করতে থাকেন আবাস যোজনায় বাড়ির জন্য পঞ্চায়েত প্রধান তাঁদের কাছেও কাটমানি নিয়েছেন। গত শুক্রবার থেকে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। তবে গত সোমবার লালবাগের সভায় কাটমানি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি শোনার পর সাহস পেয়েছেন মহাদেব। তিনি মঙ্গলবার দুপুরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
একই ঘটনা ঘটেছে রামপাড়া-১ পঞ্চায়েতে। আরতি দাস নামে এক মহিলা ওই পঞ্চায়েতের মাঙ্গনপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি অভিযোগ করেছেন, প্রথম কিস্তির টাকা ঢোকার পর তাঁর কাছ থেকে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে নেন এক পঞ্চায়েত সদস্য। পরের কিস্তির টাকা ঢুকলে পনেরো হাজার টাকা চেয়ে রেখেছেন তিনি। মঙ্গলবার তিনিও রেজিনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আরতির কথায়, ‘‘বাড়ির জন্য ওই ক’টা টাকা পেয়েছি। তাতে যদি পঞ্চায়েত সদস্য ভাগ বসান, তা হলে আমরা বাড়ি তৈরি করতে পারব না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিশ টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।’’
পঞ্চায়েত প্রধান রবীনের অবশ্য দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি জানান, এলাকার এক বিজেপি নেতা মহাদেবকে দিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘থানায় অভিযোগ হয়েছে কি না, আমি জানি না। আমার কাছে পুলিশ এখনও কিছু জানতে চায়নি।’’ আর রেজিনগরের এক পুলিশে আধিকারিক জানিয়েছেন, দু’টি অভিযোগই তাঁদের কাছে এসেছে। থানার তরফে তদন্ত শুরু হবে।
উল্লেখ্য, সোমবার লালবাগের প্রশাসনিক সভা শেষ করে মুর্শিদাবাদ জেলার সাংসদ, বিধায়ক এবং পুর চেয়ারম্যানদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। মিনিট পনেরোর সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় নেতাদের কড়া বার্তা দেন বলে তৃণমূলের একাংশের সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, বাংলা আবাস যোজনায় সুবিধা প্রাপকদের কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগ নিয়েও জেলা পঞ্চায়েত স্তরের একাধিক প্রতিনিধিকে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্নীতি ইস্যুতে দলীয় কর্মীদের আত্মসংযমের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বলেও খবর। আলিপুরদুয়ার থেকেও মুখ্যমন্ত্রী একই কথা বলেন। তাঁর কথায়, ২৮ লক্ষের মধ্যে ১২ লক্ষ বাড়ির টাকা ছাড়া (অ্যাকাউন্টে পাঠানো) হয়েছে। সরকারি প্রকল্পের টাকায় যে পয়সা চাইবে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর হবে। অ্যাকশন হবেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy