ঝগড়া করে দুই সন্তানকে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন স্ত্রী। সেই অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন স্বামী। আত্মহত্যার আগে মোবাইল, টিভি, আলমারি-সহ ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ থানার বালিরঘাট এলাকায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ১২ বছর আগে বহরমপুর থানার কাশিমবাজার ভাটপাড়ার বাসিন্দা ইতিকা হালদারের সঙ্গে বিয়ে হয় সুকুমার হালদারের। সেই সুকুমারের দেহ উদ্ধার হয় মঙ্গলবার। পরিবারের অভিযোগ, স্ত্রীর জন্য অনেক ঋণ হয়েছিল সুকুমারের। সে নিয়ে দম্পতির ঝগড়া হয়। স্ত্রী রাগ করে সন্তানদের নিয়ে বাড়ি ছাড়েন। তার পরেই আত্মহত্যা করেছেন যুবক।
মৃতের বাবা শ্যামল হালদার বলেন, ‘‘বৌমার বেহিসাবি খরচের কারণে ছেলের মোটা টাকার ঋণ হয়েছিল। আট হাজার টাকা মাসিক কিস্তি মেটাতে হত ওকে। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি লেগেই থাকত।’’ পাশাপাশি শ্যামলের অভিযোগ, তাঁর বৌমা প্রায়শই বাপের বাড়ি চলে যান। গেলে প্রায় এক মাস কাটিয়ে তবেই বাড়ি ফেরেন। সে নিয়ে ছেলের সঙ্গে বৌমার ঝগড়া হত। তিনি জানান, মাস তিনেক ধরে পুত্র এবং পুত্রবধূর অশান্তি লেগেই ছিল। গত সোমবার সকালে দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছোয়। ইতিকা রাগ করে দুই ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে যান। রঙের মিস্ত্রি সুকুমার কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফেরেন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ।
আরও পড়ুন:
পরিবার সূত্রে খবর, সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেই জিনিসপত্র ভাঙচুর করতে থাকেন সুকুমার। সদ্য কেনা ফোন, টিভি, আলনা, আলমারি থেকে চেয়ার, সব কিছু ছুড়ে, আছড়ে ভেঙে স্ত্রীর একটি শাড়ি সিলিং ফ্যানে পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়েন। সুকুমারের বাবা বলেন, ‘‘আমি আর আমার স্ত্রী তখন দোকানে গিয়েছিলাম। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়ি ফিরে এসে ঘরের জানলা দিয়ে ছেলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাই। প্রতিবেশীদের সাহায্য নিয়ে দরজা ভেঙে ওকে উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসকেরা ওকে মৃত বলে জানান।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, ৩৪ বছরের ওই যুবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত চলছে। পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।