কোদালের হাতল আর উইকেট— গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঘুম কেড়ে নিয়েছিল আপাত নিরীহ এই দু’টি বস্তু! দুয়ারে ফের একটা ভোট। এ বারেও কি সে সব....!
মুখের কথা শেষ না হতেই হতাশ গলায় ডোমকলের এক ব্যবসায়ী বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে ৪০ টাকার হাতল ৭০-৮০ টাকাতে বিক্রি করেছি। দু’দিন পর পর ‘অর্ডার’ দিয়েছি মহাজনের ঘরে। তার পরে সে হাতল পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে সাফ হয়ে গিয়েছে। আর এ বার এক জনও হাতল বা উইকেটের খোঁজ করেনি।’’
সেই ভোট। শাসকেরও বদল হয়নি। নেতা-কর্মীদের মুখও একই আছে। তা হলে? ডোমকলের প্রতিষ্ঠিত এক হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী বলছেন, ‘‘আধাসেনা যে ভাবে টহল দিচ্ছে, তাতে হাতল, উইকেট কেনা তো দূরের কথা কেনার পরিকল্পনা করতেও ভয় পাচ্ছে লোকজন। তবে এই ভয়টা ভোট পর্যন্ত থাকবে কি না জানি না। তাই ডজন তিনেক হাতল আর উইকেট তুলে রেখেছি। এখন দেখা যাক, ক’টা বিক্রি হয়!’’
পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় থেকে ডোমকলে আমদানি হয়েছিল কোদালের হাতলের। সঙ্গে উইকেট। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘উইকেট হাতে থাকে খেলোয়াড়ের হাতে। আর কৃষকের হাতে থাকে কোদালের হাতল। ফলে এগুলো হাতে থাকলে পুলিশ-প্রশাসনের কিছু বলার নেই। তবে তবে এ বারে আমাদের অন্য প্ল্যান রয়েছে। একেবারে ‘লাস্ট মিনিট সাজেশন’ দেব। সেটাই কাজ করবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অন্য দিকে বিরোধীদের দাবি, ‘‘এ বার আর সাজেশনের দরকার হবে না। বহু আগেই সিলেবাস শেষ করে ফেলেছি আমরা। কোদালের হাতল নিয়ে এলে এ বার হাতলে কোদাল লাগিয়ে দেব। আর উইকেট নিয়ে এলে সে উইকেটেরও পতন ঘটবে।’’
ডোমকলের এক খেলার সরঞ্জাম বিক্রেতা এ বারে আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নন। তিনি বলছেন, ‘‘দিনকাল ভাল নয়। গত বছর ভোটের মরসুমে উইকেট নিয়ে পড়েছিলাম মহা বিপদে। যারা জীবনে আমাদের দোকানে পা রাখে না তারাও এসে ডজন ডজন উইকেট কিনে নিয়ে গিয়েছে। বিক্রি ও লাভ ভাল হলেও ভোটের সময় মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ওই উইকেটের দাপটে আমরাও তো বুথের ধারে-কাছে ভিড়তে পারিনি। এ বার যে ক’টা উইকেট ঘরে ছিল, গুদামে রেখে দিয়েছি।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ডোমকলে চাষও হয়। খেলাধুলোতেও নাম আছে। ফলে কোদালের হাতল, আর উইকেট এমনিতেই বিক্রি হবে। তবে ভোটে যে বিক্রিতে ভাটা পড়েছে, এটা অত্যন্ত সুখবর!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy