বিদ্যুৎহীন ফুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতাল। — নিজস্ব চিত্র।
কারও হাতে স্যালাইনের নল, আবার কারও লাগানো ক্যাথিটার, আবার কেউ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে আপৎকালীন অবস্থায় এসেছেন চিকিৎসার জন্য। এমন অবস্থা যখন, হাসপাতালের তখনই চলে গেল বিদ্যুৎ। প্রবল গরমে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা থাকতে বাধ্য হন নদিয়ার ফুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালের রোগীরা। বাধ্য হয়ে তাঁরা বেরিয়ে আসেন শয্যা ছেড়ে। কেউ গাছতলায়, আবার কেউ হাসপাতালের সামনের বাগানে বসে রইলেন। হাঁসফাঁস অবস্থা প্রত্যেকের। সাময়িক স্বস্তি পেতে হাতপাখায় ভরসা রোগীর আত্মীয়দের। একই চিত্র ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডেও। মোমবাতি জ্বালিয়ে পরিষেবা দিতে হয়েছে চিকিৎসকদের। বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, শর্ট সার্কিট জনিত সমস্যার কারণে বিদ্যুৎবিভ্রাট। তবে দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও সুরাহা হয়নি সমস্যার।
সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ হঠাৎই বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায় নদিয়ার ফুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। অভিযোগ, হাসপাতালের মিটার বক্সে শর্ট সার্কিটের কারণে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গোটা গ্রামীণ হাসপাতাল। দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি হাসপাতালে। ফলে তীব্র গরমের মধ্যে এক দিকে যেমন অস্বস্তি বেড়েছে রোগীদের, তেমনই ব্যাহত হয় চিকিৎসা পরিষেবাও। মোমবাতি জ্বালিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে, এমনটাই দাবি রোগীর পরিবারের। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, বিদ্যুৎ দফতরকে জানানো হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর আত্মীয় নরোত্তম সরকার বলেন, ‘‘আমি হাই প্রেশারের রোগী। তার উপরে এই দমবন্ধ করা অবস্থা। সুস্থ মানুষ হলেও মারা যাবে। এটা হাসপাতাল না মৃত্যুফাঁদ! দীর্ঘ ক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকলেও হেলদোল নেই কর্তৃপক্ষের। শয্যা ছেড়ে মুমূর্ষু রোগীদের বাইরে বার করে নিয়ে আসতে হয়েছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে এই শরীর নিয়ে আমরা ঘেরাও করব।’’ এ নিয়ে জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘দীর্ঘ ক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকার কারণে কিছু সমস্যা হয়েছে। বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বেশি ক্ষণ চালানো সম্ভব হয়নি। বিদ্যুৎ দফতরকে গোটা বিষয়টা জানানো হয়েছে।’’
(এই প্রতিবেদনের প্রথম প্রকাশের সময় জেলা স্বাস্থ্যকর্তার বদলে উদ্ধৃত করা হয়েছিল ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে। যদিও কোনও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেনি আনন্দবাজার অনলাইন। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy