Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

রাজ্যের নিদান উড়িয়ে নিয়োগ কৃষি বিশেষজ্ঞ

সব আপত্তি উড়িয়ে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রগুলিতে (‌কেভিকে) বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ-সহ বিভিন্ন পদে নিয়োগের অভিযোগ উঠল।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

মনিরুল শেখ
মোহনপুর শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৩৫
Share: Save:

দিন কয়েক আগে রাজ্যের কৃষি দফতর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিসিকেভি) উপাচার্যকে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিভিন্ন পদে নিয়োগ স্থগিত রাখতে বলেছিল। ওই চিঠিতে উল্লেখ ছিল, রাজ্যের অনুমোদন ছাড়া ওই সব পদে নিয়োগ করা হলে তা বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে লঙ্ঘন করা হবে। সেই সঙ্গে রাজ্যের আইসিএআর (আটারি) কলকাতার কার্যালয় থেকে চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজ্যের অনুমোদন ও সংরক্ষণ বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

সব আপত্তি উড়িয়ে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রগুলিতে (‌কেভিকে) বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ-সহ বিভিন্ন পদে নিয়োগের অভিযোগ উঠল। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ১০টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে চার জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

এই নিয়োগ নিয়ে বহু দিন ধরেই বিতর্ক তৈরি হচ্ছিল। বিজ্ঞাপন প্রকাশের পরপরই বিসিকেভি-র প্রাক্তনী গোবিন্দ রায় কৃষি দফতর-সহ বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ করেছিলেন যে, কিছু প্রভাবশালী আধিকারিককে সন্তুষ্ট করার জন্য এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করছেন উপাচার্য ধরণীধর পাত্র। কৃষি বিজ্ঞানের ডিন শ্রীকান্ত দাসের ছেলেকে নিয়োগ করা হতে পারে বলে সেই সময়ে তিনি আশঙ্কাও প্রকাশ করেন। সোমবার মৃত্তিকা বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ হিসেবে ইন্টারভিউ সাঙ্গ হলে দেখা যায় শ্রীকান্তের ছেলে সায়ক দাসই নিয়োগপত্র পেয়েছেন।

গোবিন্দের দাবি, ‘‘শ্রীকান্তের ছেলেকে চাকরি দেওয়া হবে বলেই রাজ্য সরকারের আপত্তি উড়িয়ে নিয়োগ করা হল।’’ এই নিয়োগ নিয়ে তৃণমূল প্রভাবিত ওয়েবকুপা-র শিক্ষকদের সঙ্গে উপাচার্যের বিরোধও তৈরি হয়েছে। রাজ্যের কৃষি দফতর নিয়োগ স্থগিত রাখার কথা বলার পরেই সক্রিয় হয়ে ওঠে ওয়েবকুপা। তাদের বিসিকেভি ইউনিটের আহ্বায়ক সুনীল ঘোষ বলছেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বারবার রাজ্যকে অমান্য করছেন। রাজ্যের অনুমোদন ছাড়া নিয়োগ করার ফলে অতীতে একাধিক কর্মীর চাকরি পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। এটা উপাচার্য বুঝতে পারছেন না!’’ এই কারণে আবেদনকারীদের একাংশ ইন্টারভিউ দেননি বলেও তাঁর দাবি।

শিক্ষকদের একাংশের দাবি, উপাচার্যের চার বছরের মেয়াদ প্রায় শেষ হতে চলল। বিভিন্ন সময়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বেধেছে। তিনি দ্বিতীয় বারের জন্য উপাচার্য হতে পারবেন কি না তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ রয়েছে। তাই শেষবেলায় মরিয়া হয়ে তিনি নিজের ঘনিষ্ঠদের চাকরি দিচ্ছেন। কেভিকে-র আধিকারিক ও কর্মীদের বেতন দেয় আইসিএআর (আটারি)। পরিকাঠামোর ব্যাপারে রাজ্যের ভূমিকা রয়েছে।

কীটতত্ত্বের অধ্যাপক, ওয়েবকুপার নেতা সুনীল ঘোষের মতে, ‘‘রাজ্যের অনুমোদনের বিষয়টি খুবই জরুরি। না হলে অতীতে যেমন একাধিক কর্মীর সমস্যা হয়েছিল, এ বারও সে আশঙ্কা রয়েছে। তবে উপাচার্য ধরণীধর পাত্র বলেন, ‘‘এ সব বিতর্ক অর্থহীন। এই কর্মীদের বেতন তো রাজ্য দেয় না, দেয় আইসিএআর। আইসিএআর-এর ডিজি এই নিয়োগ নিয়ে আপত্তি করে কোনও চিঠি পাঠাননি। ফলে তাদের তরফে কে চিঠি দিয়েছেন, তা নিয়ে আমরা ভাবছি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Agriculture Farming
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy