Advertisement
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চোখ খুলে মেয়ে দেখল রক্তে ভেসে যাচ্ছে মা

নাবালক ছেলেমেয়ের সামনেই ঘুমন্ত দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর গলার নলি কেটে খুন করল স্বামী। বালিশ দিয়ে মুখ চেপে রাখল প্রথম পক্ষের স্ত্রী। ধরা পড়ার পরে তারা নিজেরাই এ কথা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:২৭
Share: Save:

নাবালক ছেলেমেয়ের সামনেই ঘুমন্ত দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর গলার নলি কেটে খুন করল স্বামী। বালিশ দিয়ে মুখ চেপে রাখল প্রথম পক্ষের স্ত্রী। ধরা পড়ার পরে তারা নিজেরাই এ কথা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি।

বুধবার রাতে জঙ্গিপুরে মির্ধাপাড়া পল্লিতে খুন হওয়া মহিলার নাম জাহিদা বিবি (৩৫)। তাঁর বাপেরবাড়ি ওই গ্রামেই। তাঁকে খুনের অভিযোগে স্বামী, পেশায় রাজমিস্ত্রি গোলাপ হোসেন ও তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী সারিদা বিবিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘরে বালিশের তলা থেকে উদ্ধার হয় রক্তমাখা ছেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর উনিশ আগে সমশেরগঞ্জের জোতকাশী গ্রামে বিয়ে হয় জাহিদার। দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে স্বামী সেলিম শেখ মারা যান বছর সাতেক আগে। পড়শি গোলাপের সঙ্গে নতুন করে ঘর বাঁধেন তিনি। এর আগে গোলাপের দু’বার বিয়ে হয়। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে সারিদা বিবির সঙ্গে সংসার করছিল সে। তার ফের বিয়েতে সারিদার আপত্তি ছিল। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করে বছরখানেক আগে জাহিদাকে বিয়ে করে গোলাপ। এবং জাহিদা ও তার দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে মির্ধাপাড়ায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে।

মঙ্গলবার সেখানে এসে হাজির হয় সারিদা। তবে ঝগড়াঝাঁটি হয়নি। বরং বুধবার বাড়িতে মাংস হয়। খেয়েদেয়ে জাহিদা ছেলেমেয়েদের নিয়ে কাছেই বাপের বাড়িতে শুতে যেতে চাইলেও গোলাপ আর সারিদা তাঁকে যেতে বারণ করে। জাহিদার মেয়ে পারুলের কথায়, “মেঝেতে মা, বাবা, সৎমা, আমি আর আট বছরের ভাই শুয়েছিলাম। সৎমায়ের পাশে ছিল তার ছ’মাসের ছেলে। হঠাৎ মায়ের গোঙানির শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি, বড় একটা ছেনি দিয়ে মায়ের গলা কাটছে বাবা। চিৎকার ঠেকাতে বালিশ দিয়ে মুখ চেপে ধরে আছে সৎমা। রক্তে ভাসছে বিছানা। ভয়ে চিৎকার করে উঠি। ভাইও উঠে পড়ে।’’ সে জানায়, তখনই বালিশের তলায় রক্তমাখা ছেনি ঢুকিয়ে দিয়ে কাঁদতে-কাঁদতে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় গোলাপ। ছ’মাসের শিশু ফেলে রেখে পিছু-পিছু সারিদাও।

জাহিদার মামা জব্বার শেখ বলেন, “রাত ২টো নাগাদ গোলাপ কাঁদতে-কাঁদতে এসে জানায়, কেউ ঘরে ঢুকে জাহিদাকে গলা কেটে মেরে পালিয়েছে। শুনেই সন্দেহ হয়।’’ তাঁরা গোলাপকে পাকড়াও করে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। সারিদা পালাতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেছিল। কিছু দূরে লিচু বাগানে পিকনিকের পরে গল্পগুজব করছিল পাড়ার ছেলেরা। তাদের এক জন হারু শেখ বলেন, “অত রাতে মহিলাকে যেতে দেখে জিজ্ঞেস করি, কী হয়েছে। তিনি জানান, খুন হয়েছে। তাই ভয়ে পালাচ্ছেন।” সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা সারিদাকে ধরে নিয়ে যান। সকলের সামনেই জাহিদার দুই ছেলেমেয়ে জানায়, কী ঘটেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Husband Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE