Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

ঘুম পাড়াতে গিয়েই মৃত্যু, দাবি ধৃত দাদুর

গত শনিবার বাড়ির পাশে ধান খেতে রঞ্জিত ওই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধারের পর আঙুল উঠেছিল তার দিদিমার দিকে। সে দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে শিশুর দিদিমা জবা ঢালি ও সুনীল বারুই নামে গ্রামেরই এক বাসিন্দাকে আটক করেছিল পুলিশ। স্থানীয়েরা অভিযোগ করেছিল, জবার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে অশান্তির জেরেই ওই শিশুকে খুন করা হয়েছে। তবে প্রমাণ না থাকায় জবা এবং ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিয়েছিল পুলিশ।

অভিযুক্ত দাদু। নিজস্ব চিত্র

অভিযুক্ত দাদু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৮ ০৭:২০
Share: Save:

বাড়ির পাশে ধান খেতে ১৩ মাসের নাতির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে শোকে পাগল হয়ে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ। দেওয়ালে এত বার মাথা ঠুকেছিলেন যে ফেটেই গিয়েছিল মাথা। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল গোটাটাই নাটক!

নাতিকে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সুনীল ঢালি নামে ওই বৃদ্ধকে। নবদ্বীপের প্রফুল্লনগরের ঘটনা।

গত শনিবার বাড়ির পাশে ধান খেতে রঞ্জিত ওই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধারের পর আঙুল উঠেছিল তার দিদিমার দিকে। সে দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে শিশুর দিদিমা জবা ঢালি ও সুনীল বারুই নামে গ্রামেরই এক বাসিন্দাকে আটক করেছিল পুলিশ। স্থানীয়েরা অভিযোগ করেছিল, জবার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে অশান্তির জেরেই ওই শিশুকে খুন করা হয়েছে। তবে প্রমাণ না থাকায় জবা এবং ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিয়েছিল পুলিশ।

সে সময় নিজেকে নির্দোষ হিসাবে দাবি করলেও কয়েক দিনের মধ্যেই পুলিশের জেরায় ভেঙে পড়েন সুনীল। পুলিশের দাবি, নাতির মৃত্যুতে তাঁর হাত রয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন বৃদ্ধ। জানিয়েছেন, ঘুম পাড়ানোর জন্য চাপড় মারতেই মৃত্যু হয়েছে শিশুর।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ বাড়ির পাশে এক ধানখেতে ওই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ভোরে শিশুটিকে দাদু সুনীল ঢালির কাছে রেখে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা। শিশুর মৃতদেহ উদ্ধারের পর সুনীল দাবি করেছিলেন, নাতি ঘুমোচ্ছে দেখে তিনি পাশের বাড়ি থেকে জল আনতে গিয়েছিলেন। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে দেখেন ঘরে নাতি নেই।

বাড়ি থেকে মিটার পঞ্চাশেক দূরে ১৩ মাসের শিশুর দেহ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় হইচই শুরু হয়ে যায়। এলাকার মানুষের অবশ্য দাদুর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ছিল না। বরং তাঁদের রোষে পড়েছিলেন শিশুর দিদিমা। যদিও প্রথম থেকেই জবা ও সুনীল তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন। পুলিশও জেরা করে সন্দেহজনক কিছু পায়নি।

এর পরেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কী ভাবে শিশুটির মৃত্যু হল? ওই ঘটনায় দায়ী কে? সুনীল জানিয়েছিলেন, তাঁর নাতির দেহ ধান খেতে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু ১৩ মাসের রঞ্জিত বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরের ধান খেতে কী করে গেল, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি সুনীল। তিনি ছাড়া দ্বিতীয় কেউ ধান খেতে দেহ পড়ে থাকতে দেখেননি। ধান খেতের জলে পড়ে শিশুর মৃত্যুর কথা বলা হলেও দেহের কোথাও জলকাদার চিহ্ন ছিল না।

উত্তর খুঁজতে পুলিশ ফের জেরা শুরু করে দাদুকে। পুলিশের দাবি, লাগাতার জেরার মুখে সুনীল স্বীকার করেছেন, নাতিকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে চাপড় মারছিলেন। সে সময় অসাবধানতাবশত দমবন্ধ হয়ে মারা যায় নাতি। তখনই দম আটকে মারা যায় শিশুটি। এর পরে তিনি ভয় পেয়ে গিয়ে বাড়ির উঠোনে নাতির দেহ লুকিয়ে রেখে মিথ্যা গল্প ফেঁদেছিলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Grandfather Murder Grandson
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE