ফরাক্কায় বিপত্তি।—ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষা পেল বটে তবে, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের যোগসূত্র, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক শুক্রবার সকাল থেকে থমকে গেল সারা দিনের জন্য।
এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ ফরাক্কার এনটিপিসি মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি গ্যাস-ট্যাঙ্কারের পিছনে ধাক্কা মারে পাথর বোঝাই এক ডাম্পার। চালকের বুঝতে অসুবিধা হয়নি, ট্যাঙ্কারে ছিদ্র হয়ে গিয়েছে। হুহু করে গ্যাস বেরোতে দেখে চালক গাড়িটি রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে দেন। খবর ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্কও। ট্যাঙ্কার ফেটে গ্যাস বেরোতে থাকায় পুলিশ এসেই ওই পথে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। ঘটনাস্থলে এসে পড়ে সিআইএসএফ। ঘটনাস্থলের ৫০ মিটার দূরেই রেল লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচলও বন্ধ করে দেয় সিআইএসএফ।
আর তার জেরে, এ দিন সকাল থেকে তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ে জাতীয় সড়কে। স্তব্ধ হয়ে যায় ফরাক্কা-আজিমগঞ্জ শাখায় ট্রেন চলাচলও। বাস থেকে ট্রেন, আনাজ বোঝাই লরি থেকে রোগী নিয়ে হাসপাতালের পথে ছোটা অ্যাম্বুল্যান্স— থমকে যাওয়ায় দিনভর নাজেহাল হন নিত্যযাত্রী থেকে দূরপাল্লার যাত্রীরা। জাতীয় সড়কে যানজট সুতির ধলার মোড় পর্যন্ত প্রায় ২৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থমকে যায় যান। যানজট সামলাতে পুলিশ জিগরির মোড় দিয়ে অর্জুনপুর হয়ে ফরাক্কা বাঁধ পর্যন্ত ঘুরিয়ে দেয় বাস ও ছোট যানগুলিকে। তবে, এ দিন রাত পর্যন্ত অবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ১৭.৫ টন রান্নার গ্যাস বোঝাই ট্যাঙ্কারটি হলদিয়া থেকে যাচ্ছিল গুয়াহাটি। মঙ্গলবার দুপুরে রওনা দিয়ে বুধবার সন্ধ্যেয় এনটিপিসি এলাকায় পৌঁছয় ট্যাঙ্কারটি। সকালে ফের যাত্রা শুরু করার মুখে ঘটে দুর্ঘটনা। ওই ট্যাঙ্কারের চালক মুজফফরপুরের বাসিন্দা রমেশ রাম বলেন, ‘‘শুক্রবার ভোরে গাড়ি বের করে সবে এগিয়েছি, বুঝলাম পিছনে ধাক্কা লাগল। এত দিন ট্যাঙ্কার চালাচ্ছি, বুঝতে অসুবিধা হয়নি, ভযঙ্কর কাণ্ড ঘটে গেল!’’
তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ে জাতীয় সড়কে।
সেই ধাক্কায় ভেঙে যায় ট্যাঙ্কারের রোটার ভালব। গ্যাস বেরোতে থাকে। ভোর বেলা রাস্তায় লোকজন না থাকলেও প্রায় কিলোমিটার খানেক দূরের যজ্ঞেশ্বরপুর গ্রামে গ্যাসের গন্ধ পৌঁছতে দেরি হয়নি। খবর পেয়েই লোকজন এনটিপিসি মোড়ের দিকে ছুটতে থাকেন। খবর যায় ফরাক্কা থানায়। সেখান থেকে ফরাক্কা ব্যারাজ ও এনটিপিসিতে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ, সিআইএসএফ জওয়ানেরা। আসে এনটিপিসির দমকলের ইঞ্জিনও।
দমকলের অফিসার এ কে ব্রহ্ম বলেন, “এসে দেখি এক দিকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্যাঙ্কার থেকে প্রচন্ড গ্যাস বেরোচ্ছে, তার পাশ দিয়ে গাড়ি চলছে। যে কোনও মুহূর্তে তা থেকে আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে যেতে পারত এলাকায়। তাই দ্রুত যান চলাচল বন্ধ করতে বলি।’’ আজিমগঞ্জগামী সমস্ত প্যাসেঞ্জার ট্রেন-সহ নবদ্বীপ এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিকে আটকে দেওয়া হয় ধুলিয়ান ও অন্যান্য স্টেশনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy