সাগরপাড়ার সাহেবনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন জায়গায় নো ম্যানস এলাকায় তৈরি হল বিএসএফের বিওপি। ছবি :সাফিউল্লা ইসলাম।
প্রায় ৩০ বছর আগে ভাঙনে মুছে গিয়েছিল জলঙ্গির বেশ কিছু গ্রাম। সর্বস্বান্ত শতাধিক পরিবার অস্থায়ী ভাবে ঘাঁটি গেড়েছিল নতুন ঠিকানায়। কিন্তু বছর পাঁচেক পরে মূল পদ্মা আবারও একেবারে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সরে যাওয়ার ফলে জেগে ওঠে বিস্তীর্ণ চর। জলঙ্গির সাহেবনগর পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা সেই নতুন চরকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চান নতুন ভাবে।
কিন্তু সে ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ান সীমান্ত রক্ষীর জওয়ানেরা। চাষ করতে বা মাছ ধরতে যাওয়ার সময় বিএসএফের হাজারও ফতোয়ায় প্রতিনিয়ত বাধার সম্মুখীন হতে হত। প্রায় ২৫ বছর পরে সেই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে সাহেবনগর পঞ্চায়েত এলাকার সীমান্তে। বিএসএফ এ বার একেবারে পদ্মা নদীর পাড়ে নো-ম্যানস ল্যান্ডে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। সাহেবনগর পঞ্চায়েতের উদ্যোগে সেখানে তৈরি হচ্ছে অস্থায়ী আউট পোস্ট। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিনের মধ্যেই সীমান্তের সেই নো-ম্যানস ল্যান্ডেই শুরু হবে প্রহরা।
আর তাতেই নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছে সীমান্তের গ্রামগুলিতে। এত দিন সীমান্ত থেকে কয়েক কিমি দূরে পদ্মার শাখা নদীর পাড়কে সীমান্ত ধরে নিয়ে বিএসএফ টহলদারি করত। বিএসএফের চৌকির পরে যে চাষের মাছ বা নদী রয়েছে সেখানে যেতে গেলে বিএসএফের অনুমতি নিতে হত। তা নিয়েই সময় নষ্ট ও গোলমাল হত। এ বার বিএসএফ সীমান্তর কাছ বরাবর পিছিয়ে গেলে চাষি বা মৎস্যজীবীদের আর আগের মতো কয়েক কিলোমিটার আগে থেকে পরিচয়পত্র দিয়ে কাজে যেতে হবে না। স্থানীয় বর্ডার ডেভেলপমেন্ট কমিটির সম্পাদক জুলফিকার আলির দাবি, ‘‘এত দিন বিএসএফের বন্দুকের নলটা থাকত ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে। এ বার সেই সমস্যা মিটতে চলেছে। অবাধে চলবে চাষ, মাছ ধরার কাজ।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএসএফের কর্তা বলছেন, ‘‘আমাদেরও অনেক সুবিধা হবে। প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঝামেলায় জড়াতে হবে না। এন্ট্রি করার মতো বড় একটা ঝামেলা এড়িয়ে যেতে পারব আমরা। গ্রাম পঞ্চায়েত এগিয়ে এসেছে, আমরাও এ বার এগিয়ে যাব।’’
এলাকার চাষি খায়রুল ইসলাম বলছেন, ‘‘এটা যদি হয় তা হলে এলাকার অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়বে। সাধারণ মানুষ ঠিক সময়ে চাষের মাঠে যেতে পারলে এক দিকে যেমন চাষি উপকৃত হবে, তেমনই ভাবে ভোরবেলা বা সন্ধ্যার পরে মৎস্যজীবীরা শাখা নদীতে মাছ ধরতে পারলে বদল হবে অর্থনীতির। বদলে যাবে এলাকার চেহারা।’’
সাহেবনগর পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের মজিবর রহমানের দাবি, ‘‘চাষি এবং মৎস্যজীবীদের সমস্যাটা মেটাতে পারলে হাজার হাজার মানুষের কাজ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy