আঁটঘাট বেঁধে তৈরি পুরসভা। দরপত্রও ডাকার কাজও শেষ। কিন্তু বাধ সেধেছে বিদ্যুতের খুঁটি। কেবল বিদ্যুতের খুঁটির জন্য আটকে রয়েছে ধুলিয়ানে বাইপাস সম্প্রসারণের কাজ।
প্রায় ছয় মাস ধরে আটকে ওই কাজ। বিদ্যুৎ দফতরের সাফ কথা, খুঁটি সরানোর টাকা পেলেই তবে তারা তা সরিয়ে নেবে। এ দিকে, পুরসভার দাবি, পুরসভার জমিতে খুঁটি পুঁতেছে বিদ্যুৎ দফতর। তার জন্য কোনও পয়সা পায় না পুরসভা। তাই বিদ্যুতের খুঁটি বিনা পয়সাতেই সরিয়ে নিতে হবে। দুই দফতরের এই ঠেলাঠেলিতে পড়ে আপাতত বন্ধ বাইপাস তৈরির কাজ।
ধুলিয়ান শহরে প্রধান রাস্তায় সারাক্ষণ যানজট। একাধিক বার দুর্ঘটনাও ঘটেছে। তাই ওই রাস্তার উপর চাপ কমাতে একটি বাইপাস তৈরির আবেদন বহু দিনের। লাল ফিতের ফাঁস পেরিয়ে সেই আবেদন এখন বাস্তবায়িত হওয়ার মুখে। সিজে প্যাটেল মোড় থেকে পাহাড়ঘাটি পর্যন্ত ১২০০ মিটারের এই বাইপাস কাঁকুড়িয়া হয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে গিয়ে উঠেছে। ফলে এই পথে দ্রুত জাতীয় সড়কে পৌঁছে যাওয়া যাবে তাই নয়, রাস্তাও কমে যাবে প্রায় ছয় কিলোমিটার।
প্রায় সাড়ে পাঁচ মিটার চওড়া এই রাস্তাটি এক সময় চালু ছিল। লরিও যেতে পারত। কিন্তু জবরদখল হতে হতে সেই রাস্তার পরিসর কমে এসে দাঁড়ায় দেড় মিটারে। বিদ্যুতের খুঁটিও বসেছিল সেই মতো। বাইপাস করার জন্য সেই জবরদখল হটিয়ে দিতে দেখা যায় মাঝরাস্তায় এসে পড়েছে খুঁটি। খুঁটির সংখ্যাটা প্রায় পঞ্চাশ।
স্থানীয় বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জেকাত আলি জানান, ছাদের কার্নিশ খানিক বাড়িয়ে ছিলেন তিনি। পুরসভার আবেদনে সাড়া দিয়ে বাড়ির কার্নিশ ভেঙে জেন তিনি। কিন্তু রাস্তা তৈরি না হওয়ায় হতাশ তিনি। একই ভাবে মুদির দোকানদার সেন্টু শেখ জানান, দোকানে জায়গা কম থাকায় ঘর বাড়িয়েছিলেন তিনি। সেই ঘর ভেঙে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়েও রাস্তা না হওয়ায় তাঁর প্রশ্ন, ‘‘রাস্তা আদৌ হবে কি?’’
খুঁটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য মাস দুয়েক আগে বিদ্যুৎ দফতরকে জানায় পুরসভা। প্রাথমিক ভাবে ছয়টি খুঁটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়। সেই ছয় খুঁটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য ৮৬ হাজার টাকা চায় বিদ্যুৎ দফতর। পুরপ্রধান সুবল সাহা বলেন, “ছয়টি খুঁটি সরাতে ৮৬ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। তা হলে ৫০টির জন্য লাগবে প্রায় আট লক্ষ টাকা। পুরসভা এত টাকা দিতে পারবে না।’’
রঘুনাথগঞ্জের বিদ্যুৎ দফতরের ডিভিসনাল ইঞ্জিনিয়র সুকান্ত মণ্ডল বলেন, “পুরসভার আবেদন পেয়ে খুঁটি সরানোর খরচ হিসেবে ‘কোটেশন’ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে টাকা পুরসভা এখনও জমা দেয়নি। টাকা জমা পড়লে খুঁটি সরিয়ে নেবে বিদ্যুৎ দফতর।”
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘দ্বিতীয়বার খুঁটি সরাবার কাজ যাতে বিনা পয়সায় করা হয় তার জন্য চিঠি পাঠিয়েছি। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy