ঝড়ের-দাপট: বেতাইয়ের একটি কলাবাগানে এ ভাবেই ভেঙে পড়েছে গাছ। নিজস্ব চিত্র
বৃষ্টি উপোসি খেত খামারের শুখা মাটির জন্য জল চেয়েছিলেন চাষিরা। জল এলো, কিন্তু তার সঙ্গে আসা শিলা এবং ঝড়ের দাপটে তছনছ হয়ে গেল নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের বোরোধান থেকে পাট, কলা সহ নানা মরশুমি সবজি।
চলতি বছরে কালবৈশাখী শুরু হয়েছিল দেরিতে। কিন্তু আসা ইস্তক একের পর এক শিলাবৃষ্টি সহ ঝড়ের ধাক্কায় ক্ষতির মুখে নদিয়ার প্রায় চল্লিশ হাজার কৃষক। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তেহট্ট ১ ও ২ ব্লক। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় দশ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় সত্তর কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
মরশুমের প্রথম বড় কালবৈশাখী ২৩ এপ্রিল হয়েছিল। তারপর থেকে দফায় দফায় ঝড় এবং বিশেষ করে শিলাবৃষ্টির দাপটে চাষিদের তেমন উপকার তো হয়নি, বরং ঝড়ের দাপটে শুয়ে পড়েছিল মাঠের পাকা বোরোধান। ২৭ এপ্রিলের শিলাবৃষ্টিতে ধানের সঙ্গে ক্ষতি হয়েছে আম, কলা, পেঁপে এবং লিচুর। তবে মে মাসের ৫ এবং ৬ তারিখে শিলাবৃষ্টি পাট এবং বোরো ধানের ক্ষতি করেছে। প্রায় সর্বত্রই মাঠে পাকা ধান কাটা বাকি ছিল। কিন্তু সেই ধান কেটে ঘরে তোলার আগেই তা ঝড় বৃষ্টির কবলে পড়ে। বহু জমিতে দেখা গিয়েছে জল পেয়ে পাকা ধান থেকে ফের চারা বেরিয়ে গিয়েছে।
সাহেবনগর, গোপীনাথপুর, চাপাগাড়া, বেতাই, দক্ষিণ জিৎপুর, পাথরঘাটা প্রভৃতি এলাকার বেশির ভাগ মাঠে পাট, ধান, কুমড়ো, কলা, পেঁপের মতো ফসলের বেশির ভাগই শেষ হয়ে গিয়েছে। মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে কলাচাষে। কৃষি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, তেহট্ট ১ ব্লকের ৪৬টি মৌজা এবং ২ নম্বর ব্লকের ১০টি মৌজার চাষিদের ক্ষতি হয়েছে সবথেকে বেশি।
বেতাই এর কলাচাষি মানিক বিশ্বাস বলেন, “চার বিঘা জমির প্রায় পঁচিশ শতাংশ গাছই ঝড়ে মাটিতে ভেঙে পড়েছে।’’ পাটচাষিরাও ক্ষতি মুখে। শিলার আঘাতে ফেটে গিয়েছে পাটের ডগা। রঘুনাথপুর গ্রামের প্রশান্ত বিশ্বাসের তিন বিঘা জমির পাট শিলাবৃষ্টিতে শেষ হয়ে গিয়েছে।
তেহট্ট ২ ব্লকের কৃষি আধিকারিক বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, “শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে তেহট্ট ২ ব্লকের প্রায় পাঁচ হাজার বিঘা জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।’’ শুধু পাটেই ক্ষতির পরিমাণ পঞ্চাশ কোটি টাকা।
মুর্শিদাবাদেও ক্ষতি হয়েছে ধান, তিল, পাট, আম ও কলা চাষে। ২৬টি ব্লকের মধ্যে ১১টি ব্লক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কৃষি দফতরের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভরতপুর ১,সুতি ১ ও ২, ভগবানগোলা ১ ও ২, বহরমপুর-সহ ১১টি ব্লকে ঝড় এবং শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপস কুণ্ডু বলছেন, “ক্ষতির হিসেব চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy