প্রতীকী ছবি
লকডাউনের মধ্যেই সীমান্ত থেকে বিএসএফ বেশ কয়েক জন পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার হয়েছে গাঁজা, ফেন্সিডিলের মতো সামগ্রীও। কিন্তু বিএসএফ এবং পুলিশের তরফে দাবি, লকডাউন শুরু হওয়ার পরে পাচার অনেকটাই কমে গিয়েছে।
গত ৭ দিনে বিএসএফের হাতে কয়েক জন পাচারকারী ধরা পড়েছে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায়। কিন্তু তাদের হাতে যে সামগ্রী ছিল, তার পরিমাণ খুবই কম। যে ভাবে এই মাদক পাচারের চেষ্টা হচ্ছিল, তা কোনও বড় মাথার কাজ নয় বলেও নিশ্চিত বিএসএফ। ধৃতদের নামে অতীতে মাদক পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগও ওঠেনি।
বিএসএফ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ এপ্রিল ভোর রাতে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর সেক্টরের বামনাবাদ চরে ১১৭ নম্বর ব্যাটালিয়নের প্রহরারত বিএসএফ জওয়ানরা উদ্ধার করে ৩৯ বোতল ফেন্সিডিল ও একটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া এক কিলো গাঁজা।
সে দিনই রাতে বহরপুরের দীঘলকান্দি আউটপোস্টের কাছে ৩৯ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা ৫ কেজি গাঁজা পায়। সেই রাতেই বহরমপুরের ১১৭ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরাও উদ্ধার করে সাড়ে ৩ কিলোগ্রাম গাঁজা।
১০ এপ্রিলও বহরমপুরের চরবাদ্রা আউটপোস্টে প্রহরারত ১৪১ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা রাত ১১টা নাগাদ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে, যার গায়ের জ্যাকেটে নানা খাপে ৮৫ বোতল ফেন্সিডিল ভরা ছিল। বছর ১৯ বয়সি ধৃতের নাম সাহাল রাজ, বাড়ি জলঙ্গির ঘোষপাড়ায়।
তার পরের দিন উদ্ধার হয় ১৭০ বোতল ফেন্সিডিল। পরের দিন বহরমপুরের রাজানগর আউটপোস্টের বিএসএফ জওয়ানদের হাতে রাজানগর চরে ৩৭২ বোতল ফেন্সিডিল সহ পাচারকারী ধরা পড়ে।
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি রঞ্জন জানান, গত ৭ দিনে মুর্শিদাবাদ জেলাতেই ধরা পড়েছে ৬৬৬ বোতল ফেনসিডিল এবং সাড়ে ৯ কেজি গাঁজা।
বিএসএফের এক কর্তা জানান, কাজ হারিয়ে অনেকেরই হাতে পয়সা নেই। কিছু মানুষ স্থানীয় এলাকা থেকে এগুলি নিয়ে বাংলাদেশে পাচারের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “এদের পক্ষে জাল টাকা বা আগ্নেয়াস্ত্র পাচার করা সম্ভব নয়। তা পাচারের রাস্তা এরা সে ভাবে জানে না।’’
জলঙ্গির এক ডাকাবুকো পাচারকারী বলছে, আনাজের গাড়ি বা অ্যাম্বুল্যান্সে যে ক’টা মাল আসছে, তার দাম আকাশছোঁয়া। ১৮০ টাকার মাল এ পারেই (ভারতীয় সীমান্তে) কিনতে হচ্ছে ৪০০ টাকা দিয়ে। বলছিলেন জলঙ্গি সীমান্তের ডাকাবুকো এক পাচারকারী।
এক সময়ে পাচারের রমরমা বাজার থাকলেও জলঙ্গি রানিনগরে লকডাউনের সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় তালা পড়েছে সীমান্তে। লকডাউনের আগে মাঝে মাঝে গবাদিপশুর পাচার চোরাগোপ্তা হলেও লকডাউনের পর থেকে সেটা পুরোপুরি বন্ধ। এমনকি মাদক পাচারের কারবার অনেকটাই থেমে গিয়েছে। মূলত পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ থাকার জন্যই এমন অবস্থা বলে দাবি পাচারকারীদের একাংশের। পরিবহণ ব্যবস্থা চালু থাকলে নানা রকম গাড়িঘোড়ার মাঝে পাচারের গাড়িটাকে লুকিয়ে ফেলা যায় সহজেই, তা ছাড়া অনেক সময় যাত্রী বা পণ্য পরিবহণের গাড়িতেও গোপনে খুব সহজেই চলে আসে মাদক থেকে কাশির সিরাপ। কিন্তু লকডাউনের ফলে অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া অন্য গাড়ি দেখলেই দাঁড় করাচ্ছে পুলিশ। যাত্রী পরিবহণ পুরোপুরি বন্ধ। ফলে কোনও ভাবেই সীমান্ত পর্যন্ত মাদকদ্রব্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না পাচারকারীদের পক্ষে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘প্রায় ১৬ বছর ধরে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন থানায় কাজ করছি, সীমান্তের আটঘাট খুব ভাল করেই জানা। পাচারকারীরা এমনভাবে কোনও দিন থেমে থাকেনি। কিন্তু এবার দেখছি লকডাউন এর ফাঁদে পড়েছে ওরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy