Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

জেলা জুড়ে প্রলম্বিত হচ্ছে করোনা-ছায়া

নামে  হোম কোয়রান্টিন  হলেও বাড়িতে থাকার নিয়ম যে অনেক ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না তা বলাইবাহুল্য।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০২:৩২
Share: Save:

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মুর্শিদাবাদে। প্রায় প্রতি দিনই জেলাজুড়ে কোথাও না কোথাও করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। সোমবার রাতেও জেলায় ৯ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। তাঁদের মধ্যে ৬ জনের বাড়ি শক্তিপুর থানা এলাকায় এবং তিন জনের সাগরদিঘি এলাকায়। ওই ৯ জনকে নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬২। তাঁদের মধ্যে এক জনের কো-মর্বিডিটির কারণে কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে, বহরমপুরে করোনা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে আরও এক জনের।

মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘সোমবার রাতেই সাগরদিঘি ও শক্তিপুরের ৯ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের রাতেই মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ায় এবং মাতৃসদনে রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়তে থাকায় মঙ্গলবার বিকেলে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের সুপারের চেম্বারের বৈঠক হয়েছে। সেখানে করোনা মেডিক্যাল কলেজের আধিকারিকদের পাশাপাশি মুখ্য স্বাস্থ্যআধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। ভাল চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে সেই বৈঠকে।

নামে হোম কোয়রান্টিন হলেও বাড়িতে থাকার নিয়ম যে অনেক ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না তা বলাইবাহুল্য। জেলায় সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্র হিসেবে প্রথমে খোলা হয়েছিল ৭০টি স্কুল। এখন তার অধিকাংশই তালা বন্ধ। এমনকি শাসক দল তৃণমূলের পক্ষ থেকে হোম কোয়রান্টিনের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সাগরদিঘিতে সোমবারও ৩ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। তাঁদের সকলেই এসেছেন মহারাষ্ট্র থেকে। পাশের ব্লক নবগ্রামেও আক্রান্তদের সকলের মহারাষ্ট্র যোগ রয়েছে। একই অবস্থা ফরাক্কা ব্লকেও। জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান বলছেন, “হোম কোয়রান্টিনে রাখার নির্দেশ দিয়ে খালাস প্রশাসনিক কর্তারা। কিন্তু সেটা মানা হচ্ছে কিনা তার নজরদারির কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই গ্রামে মানুষের আতঙ্ক বাড়ছে, বাড়ছে ক্ষোভও।” সাগরদিঘির তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নুরজামাল শেখ বলছেন, “হোম কোয়রান্টিন কোনও কাজের নয়। মহারাষ্ট্র, গুজরাট থেকে শ্রমিকেরা ঢুকতে শুরু করেছে তখন থেকেই হুহু করে করোনা বাড়তে বাড়তে শূন্য থেকে ৬২তে উঠেছে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এক সময় কলকাতা-সহ রাজ্যের অন্য জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও মুর্শিদাবাদে মাত্র এক জন আক্রান্ত ছিলেন। দিন পনেরো আগে দিল্লি ফেরত তিন জন সহ জঙ্গিপুর মহকুমায় চারজন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায়। এর পরে একের পর এক খড়গ্রাম, ভরতপুর, সাগরদিঘি, নবগ্রাম, ডোমকল, লালগোলা, ভগবানগোলা, শক্তিপুর, বহরমপুর শহরে করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যে ৬২ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে তার সিংহভাগ মহারাষ্ট্র ফেরত পরিযায়ী শ্রমিক। সোমবার রাতে যে ৯জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে তাঁরাও মহারাষ্ট্র ফেরত।

স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, তামিলনাড়ু, ও দিল্লিতে করোনার প্রভাব সব থেকে বেশি। ফলে ওই সব জায়গা থেকে আসা লোকজনের করোনা পজিটিভ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। কলকাতা থেকে আসা অন্তঃত পক্ষে ১০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এই আবহের মধ্যে বৃহস্পতিবার জেলায় মহারাষ্ট্র থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আরও তিনটি বিশেষ ট্রেন বহরমপুরে আসবে বলে প্রাথমিকভাবে জেলা প্রশাসন জানতে পেরেছে। ফলে চিন্তা আরও বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভিন জেলা ও ভিন রাজ্য ফেরতদের হোম কোয়রান্টিনে রেখে নজরদারি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বেশি বেশি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাও করা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy